
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

সব ছেড়ে আধ্যাত্মিকতায় জ্যাকুলিন, কে দেখালেন আলোর দিশা

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম কোন কাজটি করেন আমির

ডন হয়ে পর্দায় আসছেন আনুশকা শেঠি!

প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের ঝুঁকি নিতে বাঁধনের আহ্বান

পাইরেসির কবলে ‘তাণ্ডব’, দেখা যাচ্ছে অনলাইনেই

প্রথম সিনেমায় বাজিমাত, সিক্যুয়েলেও কি থাকছেন সাবিলা-ফারিণ?

রণবীর আউট আল্লু ইন
অভিভাবকের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে নতুন সংগীতশিল্পীরা

একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সিনেমার গানকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি। সমৃদ্ধ করেছেন তার সুরেলা কণ্ঠে। সিনেমায় তার রেকর্ডসংখ্যক গান রয়েছে। টেলিভিশন, বেতার এবং স্টেজেও পারফর্ম করেন। এখনও গুণী এ শিল্পী নিয়মিত গান করছেন। সম্প্রতি গান ও বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাতকার নিয়েছেন রিয়েল তন্ময়
গানের ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে?
টেলিভিশনের কিছু ঈদের অনুষ্ঠান করছি এ নিয়ে ব্যস্ততা কিছুটা রয়েছে। ৩০ মে একটি লাইভ শো আছে মাছরাঙায়। এছাড়াও স্টেজ শো করছি নিয়মিত। গানে গানে জীবন পার করলাম। এখনো গান করতে পারছি সেজন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। গানেই ব্যস্ত থাকতে ভালো লাগে।
আপনার অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান রয়েছে। স্টেজে কোন গানের অনুরোধ বেশি পান?
আমার তো অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান রয়েছে। আমার গাওয়া যেসব গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে এখনো, সেসব গানই শুনতে চায় বেশি। স্টেজে বেশি অনুরোধ আসে ‘চুমকি চলেছে একা পথে’ গানটির। এছাড়াও ‘ধীরে ধীরে চল ঘোড়া’, ‘যদি বউ সাজো গো’, ‘মাগো মা ওগো মা’, ‘চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে’, ‘চুরি করেছ আমার মনটা’ এগুলো শুনতে চায়।
বহু বছরের এসব পুরোনো গান এখনও শ্রোতারা শুনতে চায়, কেমন লাগে আপনার?
অবশ্যই ভালো লাগে। একজীবনেতো শুধু গানই করেছি। মানুষের হƒদয়ে গেঁথে যাওয়ার মতো কিছু গান আমি করেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। কাজেই আমার সংগীতজীবনের নানা সময় গাওয়া গানগুলো যখন মানুষ শুনতে চায়, অনুরোধ করে তখন অন্যরকম ভালো লাগে।
স্টেজে কী অন্য শিল্পীদের গান করেন?
করা হয়। আমার পছন্দের কয়েকজন শিল্পীর কিছু গান আমার খুব প্রিয়, সেগুলো গাই। যেমন বশীর আহমেদের একটি গান (লাইনটা মনে পড়ছে না) আমার ভীষণ পছন্দের। ওটা করি। সুবীর নন্দীর একটি গান খুব জনপ্রিয়, ‘দিন যায় কথা থাকে’ ওটাও করি। এই গানটির প্রতি অনেক দুর্বলতা কাজ করে। জানি না কতটুকু গাইতে পারি। সূর্য কন্যা সিনেমার একটি গান আছে, ‘চেনা চেনা লাগে তবুও অচেনা’। এই গানটি খুব পছন্দের। ভালো লাগে গাইতে। গানটির গীতিকার ফজল শাহাবুদ্দিন।
আপনাদের সময়ে সিনেমার গানগুলো খুব হিট হত। বর্তমানে তেমন দেখা যায় না। এর কারণ কী বলে মনে করেন?
তখন সময় অনেক সিনেমাহল ছিল। সিনেমাও বেশি মুক্তি পেতো। দর্শক সিনেমা দেখতেন বেশি। এখন সে তুলনায় সিনেমাহল খুবই কম, সিনেমাও কম মুক্তি পায়। যেগুলো মুক্তি পায় সেগুলোও দর্শকরা ঠিকঠাকভাবে দেখতে পারেন না। আগ্রহ থাকলেও সিনেমাহল সংকটে দর্শকদের কাছে সিনেমা পৌঁছায় না, তারা দেখতে পারেন না। সিনেমা যদি দর্শক পর্যন্ত না পৌঁছায় তাহলে তারা গান শুনবে কি করে। গানের প্রচার প্রচারণাই এখন কম। তাই শ্রোতাদের কাছে গান পৌঁছাচ্ছে না, গানটি দ্বিতীয়বার শোনার মতো আগ্রহ তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে না। আগের কিছুই এখন আর আসলে নেই। পুরনো জনপ্রিয় শিল্পীরাও তেমন গান গাইছেন না সিনেমায়। নতুনরা সে জায়গায় সুযোগ পাচ্ছে। নতুনরাই এখন বেশি কাজ করছেন, তাদেরকে সেই সুযোগ দেয়াটাও তো দরকার।
নতুন শিল্পীরা কেমন গান করছে এখন?
এখন নতুনদের সময়। আমি সবাইকে খারাপ বলবো না। তাদের অনেকেই ভালো গান করছেন, তাদের মেধা আছে। এখন শিল্পীদের করার কিছু নাই, তারা ভালো গীতিকার যদি না পায় তাহলে কি করবে। আমরা তো অনেক গুণী সুরকার, গুণী গীতিকার ও গুণী শিল্পীর সান্নিধ্য পেয়েছি। তারা সেটা পাচ্ছে না। যেটুকুই আছে এটাকে নিয়েই ভালো গান করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রপার অভিভাবক প্রয়োজন। তবে এদের গানগুলো ২০ বছর পর মানুষ মুল্যায়ন করবে।
বর্তমানে অধিকাংশ শিল্পী রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসছেন। গুটি কয়েকজন টিকে থাকলেও বেশিরভাগ শিল্পী হারিয়ে যাচ্ছেন। এর কারণ কী?
রিয়েলিটি শোয়ের দোষ দেব না। কারণ, আমিও রিয়েলিটি শোতে অতিথি কিংবা বিচারক হিসাবে থাকি। তাই দোষ আমার ঘাড়েও পড়বে। এখানে বিষয় হচ্ছে, তাদের যদি প্রপার গাইড লাইন করা না হয়, তারা টিকবে না এটাই স্বাভাবিক। শুধু কয়েকটি গান রেকর্ড করে অডিও সিডি বের করলে আর বিদেশ ঘুরিয়ে আনলেই শিল্পী হয় না। সেসব শিল্পীরা বেশিদিন টিকতেও পারে না। আমার দেখা মতে বাংলাদেশে বহু শিল্পী যেমন তাড়াতাড়ি তারকা হয়েছেন, আবার তেমনি হারিয়েও গেছেন। এসব শিল্পীদের যদি আগের একটি গান করতে বলা হয় তারা সেটা পারবে না। আমরা একটা গান ৩০ বার ৪০ বার গেয়ে ফাইনাল রের্কড করেছি। এখন দু-একবার গেয়েই রের্কড করে। বাকিটা ফিনিসিং করে মেশিনে। এভাবে তো আর একজন ভালো শিল্পী তৈরি হয় না।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারের এই সময়ে এসে কী ধরনের স্বপ্ন দেখেন?
শেষবয়সী একটা মানুষের আর কী স্বপ্ন থাকতে পারে। বয়স আশির ঘরে। এখন আর কিছু চাওয়া পাওয়ার নাই। সুস্থ থাকতে চাই। সবার ভালোবাসা ও আশীর্বাদ চাই। ইচ্ছে আছে, যতদিন বেঁচে থাকব নিজের গান গেয়ে যেতে চাই।
বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।