
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

চুরি হয়ে যাচ্ছে নতুন ভবনের মালামাল

সুনামগঞ্জে পুকুরে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু

বিদেশে গেল না আম, হতাশ ব্যবসায়ীরা

টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার

প্রেমিকের খোঁজে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী, গ্রেপ্তার ৩

পুলিশ ডেকে প্রতিবেশীকে আটকের দাবিতে আত্মহত্যার চেষ্টা, গৃহবধূ গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ায় কৌশলে তামাক ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন নওফেল
ঢাকার ট্যানারি মালিকদের অপেক্ষায় আড়তদাররা

চট্টগ্রামের আড়তদাররা এখন পর্যন্ত চার লাখ ১৫ হাজার পিস কুরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছেন। এসব কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে কয়েকশ চামড়ার গুণগত মান নষ্ট হয়েছে বলে আড়তদাররা জানিয়েছেন। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বেঁধে দেওয়া দরে চামড়া কেনেননি আড়তদাররা। অন্যান্য বছরের মতো এবার সিন্ডিকেট করে তারা পানির দরে চামড়া কিনেছেন। তারা এখন ঢাকার ট্যানারি মালিকদের অপেক্ষায় আছেন।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এবার চার লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে গরুর চামড়া সংগ্রহ হয়েছে তিন লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস। মহিষের চামড়া ১০ হাজার ৫০০ পিস। ছাগলের চামড়া ৫২ হাজার ৫০০ পিস। চামড়া কেনার মতো ট্যানারি চট্টগ্রামে না থাকায় ঢাকার ট্যনারি মালিকদের ওপর নির্ভর করতে হয় আড়তদারদের। আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে চামড়া বিক্রি শুরু হবে বলে আশা করছেন আড়তদাররা।
আড়তদাররা জানান, এক সময় চট্টগ্রামে ২২টি ট্যানারি থাকলেও বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় সবগুলোই। এখন রিফ লেদার নামে একটি ট্যানারি রয়েছে। এ কারণে প্রতিবছর সংগৃহীত চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় আড়তদারদের। চামড়া বিক্রির জন্য পুরোপুরি নির্ভরশীল হতে হয় ঢাকার ট্যানারি মালিকদের ওপর।
এবার চট্টগ্রামে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। ছোট আকারের গরুর চামড়া ৩০০-৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের চামড়া ৫০০-৬০০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া ৬০০-৭০০ টাকা দরে কিনেছেন আড়তদাররা। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। সেই চামড়া তিন-চার হাত ঘুরে আতুরার ডিপো এলাকার আড়তে আসে। কুরবানিদাতা থেকে আড়তে আসতে দাম অন্তত দু-তিনগুণ বেড়ে যায়। এদিকে অতিরিক্ত গরমে চট্টগ্রামে ৫০০-৬০০ পিস কুরবানির পশুর চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চট্টগ্রামে কুরবানি পশুর চামড়ার দাম নিয়ে নজিরবিহীন কারসাজির ঘটনা ঘটেছে। আড়তদাররা ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আড়তদার সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকার চামড়া হাতিয়ে নিয়েছেন। ছোট ও বড় গরুর প্রতিটি চামড়া গড়ে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা দামে কিনে নিয়েছেন তারা। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সারাদিন চামড়া সংগ্রহ করে মধ্যরাতে গাড়ি ভরে অসংখ্য মৌসুমি ব্যবসায়ী এসেছিলেন আতুরার ডিপো এলাকায়। দাম না পেয়ে তাদের প্রায় অনেকেই এসব চামড়া রাস্তায় ফেলে চলে গেছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হিসাবমতে, প্রায় এক লাখ চামড়া পরিত্যক্ত অবস্থায় আবর্জনা হিসাবে তারা সরিয়ে ডাম্পিং করেছেন। মৌসুমি চামড়ার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রফিক জানান, এ বছর চামড়ার আড়তদাররা ভয়াবহ কারসাজি করেছেন। ৯৮ শতাংশ মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী লোকসানের মুখে পড়েছেন। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কম মূল্যে চামড়া কিনেছেন।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দিন বলেন, এবারের ঈদে সাড়ে তিন লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখন পর্যন্ত চার লাখ ১৫ হাজার পিসের বেশি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আরও কিছু চামড়া রয়েছে। নগরীর কালুরঘাট, আতুরার ডিপো, হালিশহর, বিবিরহাটসহ নগরী ও নগরীর বাইরে বিভিন্ন এলাকার আড়তদাররা চামড়াগুলো লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করছেন। চট্টগ্রামে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ চামড়া কেনার মতো ট্যানারি এখানে নেই। রিফ লেদার নামে একটি ট্যানারি ৫০ হাজার পিস চামড়া কেনার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে খুলনার সুপার ট্যানারিও কিছু চামড়া কিনবে। অবশিষ্ট চামড়া বিক্রির জন্য ঢাকার ট্যানারি মালিকদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আশা করছি, সপ্তাহ দু-এক পর তারা চামড়া কেনার জন্য চট্টগ্রাম আসবেন।