কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ইসলামিক কমপ্লেক্স

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ইসলামিক কমপ্লেক্স

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১ মে, ২০২৫ | ১০:৫৩ 20 ভিউ
কিশোরগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে নরসুন্দা নদীর চরে অবস্থিত ঐতিহাসিক ‘পাগলা মসজিদ’। মসজিদটিতে মনের মকসুদ পূরণে শত বছর ধরে মানুষ মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার দিয়ে আসছে। পাশাপাশি গরু-মহিষ, ছাগল, মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু-পাখি দিয়ে যাওয়ার ঐতিহ্যও শত বছরের। দানের টাকায় এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। এটির নির্মাণকাজ শেষ হলে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানিয়েছে ব্যবস্থাপনা কমিটি। এছাড়া এই দানের অর্থ থেকে অন্যান্য মসজিদ-মাদ্রাসা, দরিদ্র মানুষ ও শিক্ষার্থীদের সাহায্য করা হয় বলেও জানা গেছে। জনশ্রুতি আছে, এক সময় মসনদে আলা বীর ঈসা খাঁর বংশধর হয়বতনগর জমিদার বাড়ির জিলকদর খান নামে এক সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইলের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতি স্থানে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। তার দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে মসজিদ হিসাবে ব্যবহার শুরু করেন এলাকাবাসী। এরপর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দান-খয়রাত করলে মনের বাসনা পূরণ হয়-এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের দেশি-বিদেশি নারী-পুরুষ ছুটে আসেন এ মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, সোনা ও রুপার অলংকারের পাশাপাশি গরু-মহিষ, ভেড়া-ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। প্রতিদিনই মানত দিতে আসা লোকজনের ভিড় থাকলেও প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের দিন এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা মানুষের ঢল নামে। পাগলা মসজিদের ইতিহাস আড়াইশ বছরেরও অধিক পুরোনো। সাধারণত প্রতি তিন মাস অন্তর এ মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়ে থাকে। এসব দানবাক্সে মেলে কোটি কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার। টাকার পরিমাণ এতই বিপুল যে, সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল চার মাস ১১ দিন পর পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খুলে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া যায়। দানের এ টাকা গণনায় অংশ নেন জেলা প্রশাসনের ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসা-এতিমখানার ২৫৭ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে পাওয়া যায় সংসারের দুঃখ-কষ্ট লাঘব, রোগমুক্তি এবং মনের আশা পূরণের অসংখ্য বেনামি চিঠি, চিরকুটও। মানত হিসাবে পাওয়া দানের এসব অর্থ-সম্পদ ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে স্থানীয় পৌরসভাসহ গণ্যমান্য লোকজনের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে পরিচালনা কমিটি। এই অর্থ থেকে তারা কমপ্লেক্সের মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে থাকেন। পাশাপাশি অন্যান্য মসজিদ-মাদ্রাসা, এতিমখানা এমনকি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষ, দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। তবে কয়েক বছর ধরে এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইসলামিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে কাজ শুরু হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন হলে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্সে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান। গত ১২ এপ্রিল সর্বশেষ দানবাক্সের টাকা গণনার দিন গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি আরও জানান, দানবাক্স থেকে পাওয়া টাকার মধ্যে বর্তমানে ব্যাংকে ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৩ টাকা জমা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
১৩ ছক্কায় যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাক্সওয়েলের ‘তাণ্ডব’ সব ছেড়ে আধ্যাত্মিকতায় জ্যাকুলিন, কে দেখালেন আলোর দিশা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম কোন কাজটি করেন আমির ‘হুঁশিয়ারির সময় শেষ, এবার শাস্তির পালা’: ইরানি সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি নেতানিয়াহুকে চুরি হয়ে যাচ্ছে নতুন ভবনের মালামাল সুনামগঞ্জে পুকুরে ডুবে ২ বোনের মৃত্যু বিদেশে গেল না আম, হতাশ ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত প্রকাশকে ‘নিরাপত্তা হুমকি’ দেখত হাসিনার সরকার সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া ইসরাইলের আকাশসীমা দখলে নেওয়ার দাবি ইরানের এআই যুদ্ধের সূচনা, কতটা সফল হবে ডিপসিক? শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিনটা বাংলাদেশের ধ্বংসযজ্ঞে অনড় ইরান-ইসরায়েল তবু আপন কর্তব্যে অবিচল সেনাবাহিনী ঘাটতি বাজেটের অর্থায়নই প্রধান সমস্যা ঢাকাসহ দেশের ১৭টি অঞ্চলে ঝড়ের সম্ভাবনা শপথ ছাড়াই ‘নির্দেশনা’ দিচ্ছেন ইশরাক, সরকার নীরব তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ ঢাকায় পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার ইমরান হায়দার টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার