
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ

সাংবাদিকের নামে ফেসবুকে অপপ্রচার, সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা

গুলিবিদ্ধ হলেও ‘জুলাই যোদ্ধা’ স্বীকৃতি মেলেনি রাকিবের

সাড়ে তিন বছর পর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন জামায়াত নেতা

বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত এ বাড়ি ছেড়ে যাব না

বগুড়ায় উদীচীর পরিবেশনে বাধা-ভাঙচুর, ৭ জন আহত

ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে প্রেম ও ধর্ষণ, অতঃপর…
দুই কিলোমিটার দৌড়েও বাঁচতে পারলেন না কৃষক

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় স্বামীকে বাঁচাতে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন স্ত্রী খোদেজা আক্তার। এরপরে আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী আলাল উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানেও প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা-ভাঙচুর করে। অবশেষে সেই বাড়ি থেকে বের হলে হামলাকারীরা পিছু নেয়। তিনি জীবন বাঁচাতে দৌড়াতে থাকেন পাশের গ্রাম পালান্দরের দিকে। প্রায় দুই কিলোমিটার দৌড়ে রাস্তার মাঝে সজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন আবেদ আলী খা (৭০)। এলাকাবাসী তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের হিম্মতনগরের ছমির খানের ছেলে।
খোদেজা জানান, তার স্বামী তার ভাই ছাবেদ আলী ছাবুর কাছ থেকে সাড়ে ২২ শতাংশ জমি কেনেন। সেই জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় শনিবার দুপুরে হামলা চালায়। আমরা দুজন নিজ ঘরে আটকে ছিলাম। স্বামীকে বাঁচাতে ৯৯৯ নম্বরে কল দিই। এরপরে আক্রমণ ও হামলা বেড়ে যাওয়ায় স্বামীকে প্রতিবেশী আলাল উদ্দিনের ঘরে আশ্রয়ের জন্য পাঠিয়ে দিই। সেখানে গিয়েও ছাবেদ আলী, জাবেদ আলী, আমিরুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলামসহ লোকজন হামলা চালায়। হামলা করে আলাল উদ্দিনের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। নিরুপায় হয়ে সেখান থেকে বেড়িয়ে এলে তারা আবারও হামলা করে। এ সময় আমার স্বামী পালান্দর গ্রামের দিকে দৌড়াতে থাকেন। পেছন পেছনে তারা ধাওয়া দেয়। পালান্দর গ্রামের লোকজন আমার স্বামীকে গৌরীপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তিনি মারা যান।
গৌরীপুর হাসপাতালের চিকিৎসক হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা গেছেন। তার শরীরে বড় ধরনের আঘাতে কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শুধু বাম হাতে একটি কাটা ও ঘাড়ে আচড়ের দাগ রয়েছে।
গৌরীপুর থানার উপপরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের জরুরি নম্বরে কল পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে দুপক্ষ ছাড়াও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা হয়। হামলার শিকার আলাল উদ্দিনের বাড়িতেও আমরা গিয়েছি। তখন ছাবেদ আলী ভয়ে পালিয়ে গেছে শুনেছি।
পালান্দার গ্রামের সাহাব আলীর ছেলে সীমান্ত রায়হান সিজান বলেন, আবেদ আলী রাস্তায় পড়ে ছটফট করছিলেন। লোকজন তাকে হাসপাতালে পাঠায়। তার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে তাকে পাওয়া যায়।
ভাগিনির বিয়েতে এসে মামা খুন : ভাগিনির বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে শুক্রবার গৌরীপুরে উপজেলায় কলেজছাত্র মারফত আলীকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে আহত করে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার মারা যান তিনি। নিহত মারফত নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের ধূরুয়া গ্রামের মো. কাশেম আলী ফকিরের ছেলে। তিনি শুক্রবার দুপুরে ভাগিনির বিয়ে উপলক্ষ্যে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের সাকুয়া মাঝেরচর গ্রামে যান। বিয়ে শেষে ভাগিনিকে এগিয়ে দিতে যাওয়ার সময় গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ীর সামনে তার মোটরসাইকেল আটকিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা।
ঘটনার পরই হত্যাকারীরা নিজেদের মোটরসাইকেলটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। বর্তমানে মোটরাসাইকেলটি গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল বারেকের হেফাজতে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত মারফত ফকিরের বাড়ির কাছে অভিযুক্ত তানভীরের বাড়ি। তিনি ওই গ্রামের উসমান খাঁর ছেলে। এলাকায় তানভীরের অপকর্ম নিয়ে ফকির বাড়ির লোকজন প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১০ জনকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় তানভীর ও তার লোকজন। এসব ঘটনার পর তানভীর নিজের ফেসবুক আইডিতে এসে স্বীকারও করেন। এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ তাকে ধরেনি। পরে বিভিন্ন সময় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে অনেককেই প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এই হুমকিতে ছিল মারফতও। মারফতের ওপর হামলা করার পর পরই তানভীর নিজের ফেসবুক আইডিতে বিভিন্ন ইঙ্গিত করে পোস্ট দিলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। মৃত্যুর পর তানভীর নিজেকে আড়াল করতে ফেসবুক আইডিতে এসে নিজে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে সাফাই গান।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মাযহারুল আনোয়ার বলেন, হিম্মতনগরে হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ভাংনামারীর হত্যার ঘটনায় ভিকটিম ও হামলাকারীরাও নান্দাইলের। দুটি ঘটনায় এখন পর্যস্ত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।