ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরোধিতার নাম সংস্কার নয়: মিজানুর রহমান আজহারী

ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরোধিতার নাম সংস্কার নয়: মিজানুর রহমান আজহারী

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ১০:১৪ 22 ভিউ
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হয়নি। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরোধিতার নাম সংস্কার নয় বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। অনতিবিলম্বে এই কমিশন বিলুপ্তির দাবি করেছেন তিনি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। সেই প্রতিবেদনের বেশ কিছু প্রস্তাবনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এবার এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্টে নিজের মতামত তুলে ধরলেন মিজানুর রহমান আজহারী। মিজানুর রহমান আজহারীর ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের হুবহু তুলে ধরা হলো- নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি জনপরিসরে প্রকাশিত না হলেও, গণমাধ্যমে বেশ কিছু সুপারিশ উঠে এসেছে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো— জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধের মোটেও তোয়াক্কা করা হয়নি এ সংস্কার প্রস্তাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরোধিতার নাম সংস্কার নয়। রাষ্ট্রীয় এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে, অবশ্যই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধকে আমলে নিতে হবে। সুপারিশসমূহে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণের মতো ধর্মীয়-নীতি-অনুসরণকারী আইনগুলোর ওপর আনা হয়েছে সংস্কার প্রস্তাবনা। মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মে স্বতন্ত্র পারিবারিক আইন বিদ্যমান থাকলেও, প্রস্তাব এসেছে— একটি অভিন্ন পারিবারিক আইন তৈরি করা। যুক্তি হিসেবে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনে নারীর প্রতি বৈষম্য বিদ্যমান।’ প্রতিটি ধর্মেই বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। বিয়ের মাধ্যমে দুজন নারী-পুরুষের মাঝে গড়ে ওঠে পবিত্র বন্ধন, তৈরি হয় যৌন-সম্পর্কের বৈধতা। তবে, সমাজ ও বাস্তবতা বিবর্জিত একটি বিশেষ শ্রেণি বৈবাহিক সম্পর্কের মাঝেও ধর্ষণের গন্ধ খুঁজে পান। তথাকথিত ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে তারা স্বামী-স্ত্রীর সহজাত খুনসুটিকে দেখানোর চেষ্টা করেন ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে। মূলত, আবহমানকাল ধরে চলে আসা এদেশের পারিবারিক কাঠামো ও ঐতিহ্যকে ভেঙে চুরমার করে ফেলাই এই শ্রেণিটির উদ্দেশ্য। এ ছাড়া তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণের ক্ষেত্রে ইসলামের সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা রয়েছে। সেই দিক-নির্দেশনা ও সেসবের কার্যকারিতা যে যাচাই করা হয়নি— ধর্মকে রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করানো ও নারী-বৈষম্যের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা থেকেই বিষয়টি স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। তাদের মতে, ধর্ম যেহেতু নারী-সমাজের প্রতিপক্ষ, তাই রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে বিতাড়িত করা জরুরি। সেই লক্ষ্যেই তারা সংবিধানের ২(ক) নং অনুচ্ছেদের সংশোধনী চায়— যেখানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম স্বীকৃত। বাংলাদেশের প্রচলিত সংবিধানের ১৮ (২) নং অনুচ্ছেদে পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ হলেও, কমিশন সেটি মানতে নারাজ। সংস্কার কমিশনের সদস্যরা পতিতাবৃত্তিকে নিবৃত্ত করার প্রচেষ্টাকে চিহ্নিত করেছেন মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে। উপরন্তু, বেশ্যাবৃত্তিকে তারা পেশা হিসেবে মূল্যায়ন করতে চান। অথচ বেশ্যাবৃত্তি হচ্ছে নারীত্বের সর্বোচ্চ অপমান। চরম অশ্লীলতার এহেন জঘন্য কাজের অস্তিত্ব কোনো সভ্য সমাজে যে থাকতে পারে না, সুস্থ বিবেকবান মানুষমাত্রই তা স্বীকার করবে। তা ছাড়া যাদের জন্য এই আইনের সংশোধনী চাওয়া হচ্ছে— অর্থাৎ পতিতারা— তারাও এই অন্ধকার জগতের অভিশাপ থেকে বাঁচতে চায়। ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের একাধিক ধারায় পরিবর্তন আনার সুপারিশও করেছেন। সেখানে প্রায় সকল জায়গায় ‘নারী-পুরুষ’ শব্দবন্ধের পরিবর্তে ‘লিঙ্গ পরিচয়’ শব্দদ্বয় ভুক্তির প্রস্তাবনা দিয়েছেন, যা সমকামী, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার— তথা এলজিবিটিকিউ+ মতবাদকে অন্তর্ভুক্ত করবার দুরভিসন্ধি বলেই মনে হয়। নীতি-আদর্শ বিবর্জিত সমাজ-বিধ্বংসী এসব প্রস্তাবনা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এদেশের জনসাধারণ কেউ মেনে নেবে না। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি— অনতিবিলম্বে এই বিতর্কিত ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ বিলুপ্তি ও এর প্রতিবেদন বাতিল করা হোক। পাশাপাশি, সমাজের ধর্মীয় অনুশাসন ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, নারী-পুরুষের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ছায়ানট কমিটির পুনর্বিন্যাস, সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বণ্টন, আ‌গে স্থানীয় নির্বাচনসহ ১৬ দা‌বি ইসলামী আ‌ন্দোলনের এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ কাম্য নয়, আলোচনায় বসার আহ্বান ব্যবসায়ী নেতাদের শান্তর জায়গায় টেস্ট অধিনায়ক হচ্ছেন কে শাটডাউন কর্মসূচিতে বেনাপোল কাস্টমসে বন্ধ আমদানি-রপ্তানি টেস্ট নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেন শান্ত ‘মার্চ টু এনবিআর’ শুরু, সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তেহরানে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা, হাজারো শোকাহত মানুষের উপস্থিতি ধর্মঘট প্রত্যাহার, ৪৫ ঘণ্টা পর পাবনা-ঢাকা বাস চলাচল শুরু সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ই-গভর্নেন্স এর ভূমিকা ও যুব সমাজের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনু‌ষ্ঠিত আমি জীবনে ভুল মানুষ বেছে নিয়েছিলাম : শ্রাবন্তী ইসরাইলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৭১ ফিলিস্তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় জামায়াত: শফিকুর রহমান গাজায় ত্রাণ সরবরাহের সরাসরি পথ বন্ধ করল ইসরায়েল দীর্ঘদিন পর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল আত্মসমর্পণ শব্দটি আমাদের শব্দভাণ্ডারে নেই: খামেনি ভারতের মুসলিমরা নিজ দেশেও ‘পরবাসী’ ইসরায়েলে ভয়াবহ আগুন, রূপ নিতে পারে দাবানলে পাকিস্তানে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ৬ এজেন্টকে গ্রেপ্তার