
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

খুলনায় বিষাক্ত মদপানে আরও ২ মৃত্যু, অসুস্থ কয়েকজন

কলাপাড়ায় ইউএনওর পুকুরে মিলল জীবন্ত ইলিশ

মাদকাসক্ত যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল মা ও ভাই

স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ২৫ কেজি দুধ দিয়ে গোসল

৫৪ বছর ধরে রশি টেনে ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার

মাদ্রাসা টিকে আছে বলেই আমাদের ওপর বিভিন্ন ঝড়-ঝাপটা আসে : ধর্ম উপদেষ্টা

পিরোজপুরের নৌকা কিনতে চায় আলজেরিয়া, বিনিয়োগেও আগ্রহী
সিভিল সার্জন অফিস রাত ২টা পর্যন্ত খোলা ছিল কেন? অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীর

চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি পরীক্ষা না দিয়েও নিয়োগ পেয়েছেন অনেকে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভাইভা দিতে পারেননি অনেক চাকরিপ্রার্থী। একই সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁস ও অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একজন অভিযোগ করেছেন, পরীক্ষার আগের দিন সিভিল সার্জন অফিস রাত ২টা পর্যন্ত খোলা ছিল কেন? আরেকজন বলেন, ভাইভা বোর্ডে গিয়েই জানতে পারেন, তার জায়গায় অন্য একজনের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরীক্ষার্থীসহ জেলার সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী পদের নিয়োগকে ঘিরে যেন অভিযোগের ইয়ত্তা নেই। প্রশ্ন ফাঁস, ফলাফল সংশোধনসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ জেলার সব মহলেই আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভাইভা বোর্ডে ডাক পাননি অনেকে। আবার লিখিত পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও কেউ চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। পরীক্ষার আগের রাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় খুলে গোপন মিটিং ও পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গত ২০ জুন চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে স্বাস্থ্য সহকারী পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩৯টি পদের বিপরীতে আবেদন করেন ১৩ হাজার ৬৬৮ জন। তবে পরীক্ষায় অংশ নেন চার হাজার ৮৭৪ জন। প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষার আগের দিন ১৯ জুন রাতভর খোলা ছিল সিভিল সার্জনের কার্যালয়। এ সময় কিছু পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়। শুধু তাই নয়, ২২ জুন লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও পরিবর্তন আনা হয় পরদিন। এতে দেখা যায়, পরীক্ষায় অনুপস্থিত কিছু পরীক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হয়েছেন। সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থী জানান, ‘আমার সামনে ও পেছনে যে দুজন পরীক্ষার্থী ছিলেন, তারা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেননি। অথচ তারা পরে উত্তীর্ণ হন! এটা কীভাবে সম্ভব?’ আগামী ৭ জুলাই নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদানের কথা রয়েছে। এদিকে, নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৩৯ প্রার্থী বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। কিন্তু আধাঘণ্টা আগে তা স্থগিত করেন তারা। এরপর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে।
চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আয়েশা হুসাইন নামে এক চাকরিপ্রার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেন, ৩০২ নম্বর কক্ষে এক পরীক্ষক একজন পরীক্ষার্থীকে উত্তর বলে দিচ্ছিলেন। তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, পরীক্ষার আগের দিন সিভিল সার্জন অফিস রাত ২টা পর্যন্ত খোলা ছিল কেন? এসব অভিযোগ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত দাবি করেছেন সাধারণ নাগরিক ও ছাত্র সংগঠনগুলো। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের মেহেদী হাসান মুন্না জানান, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। কিন্তু ভাইভা বোর্ডে গিয়েই জানতে পারেন, তার জায়গায় অন্য একজনের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষার আগেই হাতে লেখা উত্তরসহ প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস না হলেও পরে দেখি ওই প্রশ্নেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানান অপর প্রার্থী সাজেদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘নিয়োগ নিয়ে এমন জালিয়াতি দেখে আমি হতবাক। আমি চাই এসব অভিযোগের তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক।’ ভুক্তভোগী প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. হাদি জিয়াউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এ নিয়োগ পরীক্ষা শতভাগ স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস বা অনিয়মের কোনো সুযোগই ছিল না।’