
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

হাতিয়ার কুখ্যাত ডাকাত ফখরুল ইসলাম এর প্রধান সহযোগী নাসির উদ্দিন আটক

সরকারি শিশু পরিবারে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন

ফটিকছড়িতে যুবদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ

জামালগঞ্জে তিন কেজি গাঁজাসহ চারজন গ্রেফতার

নগরকান্দা উপজেলার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা

অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ তিনজন নিহত

নতুন বিসিবির অধীনে ক্রিকেটে দেশি কোচদের গুরুত্ব বেড়েছে
সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল করেছেন ইউএনও

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে স্বপদে বহাল করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। যদিও তিনি অন্তত পাঁচটি ফৌজদারি মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও জমা হয়েছে।
জানা যায়, পদাধিকার বলে ইউএনও রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি। গত বছর ইউএনও এই কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিট করান। এতে উঠে আসে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত কলেজের প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন সেলিম রেজা। তবে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে তাকে স্বপদে ফেরালেন ইউএনও। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সেলিম রেজা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ সমর্থক। তবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে সাবেক এমপির নারীঘটিত বিষয়ে কথা বলার জেরে এলাকার তৎকালীন সংসদ-সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী তাকে হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন। এতে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন সেলিম রেজা। তখন মার খেয়েও তিনি তখন বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। তবে এখন তিনি বলছেন, ওমর ফারুক চৌধুরী তাকে ঠিকই পিটিয়েছিলেন।
শিক্ষকদের বেতনের টাকায় ভাগ বসানো, নিয়োগ বাণিজ্যসহ কলেজের আয়ের বিপুল টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে সেলিম রেজার বিরুদ্ধে। আওয়ামী সরকারের আমলেই তার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হয়। কিন্তু এরপর ১৮ মাসেও তাকে বরখাস্ত করা হয়নি। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে তিনি আর কলেজে যাননি। পরে ৫ আগস্ট থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ছুটি দেখান। এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (মাউশি) তদন্ত করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়মের সত্যতা পায়। তাই গত বছরের মার্চ থেকে তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ২২ সেপ্টেম্বর সেলিম রেজা কলেজে ফিরলে ৫ নভেম্বর কলেজের ৩২ জন শিক্ষক তাকে বরখাস্তের জন্য কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও ইউএনও আবুল হায়াতের কাছে আবেদন করেন। তখন ইউএনও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় কলেজের শিক্ষক হাসিনা পারভীনকে। এদিকে সেলিম রেজা স্বপদে ফেরার জন্য গভর্নিং বডির সভাপতি ও ইউএনওর কাছে সম্প্রতি আবেদন করেন। ইউএনও এ ব্যাপারে ২৮ জানুয়ারি তার কার্যালয়ে গভর্নিং বডির সভা ডাকেন। সভাপতির ডাকে সেখানে যান গভর্নিং বডির সদস্য সচিব হাসিনা পারভীন, শিক্ষক প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য নুমায়ন আলী। ওই সভায় ইউএনও সেলিম রেজাকে স্বপদে বহাল করার প্রস্তাব দেন। এ সময় কমিটির অন্য তিন সদস্য এর বিরোধিতা করেন। কিন্তু তারপরও ইউএনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন এবং একটি কার্যবিবরণী তৈরি করে একাই স্বাক্ষর করেন।
গভর্নিং বডির সদস্য সচিব হাসিনা পারভীন বলেন, সেলিম রেজার বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলায়। ইউএনও স্যারের বাড়ি সাঁথিয়ায়। পাশাপাশি এলাকা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউএনওকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। ইউএনওর স্বাক্ষর করা কার্যবিবরণীতে লেখা হয়েছে, কলেজের আরও কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আছে। মামলার কারণে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা হলে অন্যদেরও বরখাস্ত করতে হবে। এতে কলেজের পাঠদান ব্যাহত হবে। তাই মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই বরখাস্ত না করার সিদ্ধান্ত নেন ইউএনও। এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা পারভীন ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অধ্যক্ষ সেলিম রেজা তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। অডিট রিপোর্টে ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এই রিপোর্টও যথাযথ নয়।