চট্টগ্রামে নেই ন্যূনতম প্রস্তুতি

চট্টগ্রামে নেই ন্যূনতম প্রস্তুতি

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৩ জুন, ২০২৫ | ১০:৩৫ 32 ভিউ
চট্টগ্রামে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত চার দিনে ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নগরবাসীর মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হলেও সরকারি প্রস্তুতি অনেকটাই শূন্যের পর্যায়ে। নেই পরীক্ষা চালুর জন্য প্রয়োজনীয় কিট, অচল হয়ে আছে বিশেষায়িত হাসপাতালের বেশিরভাগ ভেন্টিলেটর। আর জনবল সংকট তো রয়েছেই। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিছু কিট এসে পৌঁছেছে। আগামীকাল শনিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় গত বুধবার জরুরি বৈঠকে বসেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বৈঠকে কিছু প্রাথমিক সিদ্ধান্ত এলেও বাস্তবায়ন বা মাঠপর্যায়ে কার্যকরের প্রস্তুতি এখনো অনুপস্থিত। তবে চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন দু-একজন করে শনাক্ত হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। সরকারিভাবে পরীক্ষা শুরু করা না গেলে আসল চিত্র বের হয়ে আসবে না। তাই অতিদ্রুত সরকারিভাবে করোনা পরীক্ষা চালু করা আবশ্যক। বিশেষায়িত দুই হাসপাতালই অপ্রস্তুত: বুধবার স্বাস্থ্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরি বৈঠকের পর চট্টগ্রামের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও সিটি করপোরেশনের মেমন-২ হাসপাতালকে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল বলে ঘোষণা দেন চসিক মেয়র। তবে দুই হাসপাতালের একটিও করোনা চিকিৎসার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা আছে ১৮টি। এর মধ্যে শুধু একটি আইসিইউ শয্যার ভেন্টিলেটর সচল রয়েছে। যেটিতে ভেন্টিলেটর সচল রয়েছে, সেটিও মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে পড়ে। অন্যগুলোর সঙ্গে শুধু অক্সিজেন সংযোগ থাকলেও জীবন রক্ষাকারী পূর্ণাঙ্গ সেবা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। অন্যদিকে, এ হাসপাতালে জনবল সংকট চরমে। ২০২৪ সালের কাঠামো অনুযায়ী বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ১৭৭ জন। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ৪২ জন। এর মধ্যে চিকিৎসা কর্মকর্তা আছেন ২০ জন। এ ২০ চিকিৎসকের মধ্যে সাতজন সহকারী রেজিস্ট্রার, ছয়জন জরুরি বিভাগে, পাঁচজন বহির্বিভাগে এবং একজন করে প্যাথলজি, ইউনানি, ডেন্টাল ও কারা বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। ২০২০ সালে হাসপাতালটি করোনা ইউনিটের জন্য যে ২২ জন চিকিৎসক সংযুক্তি পেয়েছিল, তাদের সবাইকে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে বদলি করা হয়। এরপর আর কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালেরও একই অবস্থা। মেনন-২ হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা নেই। এখানে করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ২০টি শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি টিকা পাওয়া সাপেক্ষে বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের করোনার টিকা দেওয়া হবে। জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকরাম হোসেন বলেন, আইসিইউ শয্যাগুলো মেরামতের জন্য অধিদপ্তর থেকে লোক আসবেন। পাশাপাশি আইসিইউ চালাতে নতুন করে জনবল প্রয়োজন। কারণ, আগের অনেকে এখন নেই। আর জনবল ও যন্ত্রপাতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইমাম হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের মেনন-২ হাসপাতালে করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হবে। এখানে ২০টি শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে শয্যাগুলো প্রস্তুত হবে। পাশাপাশি এখানে আমরা কিট পেলে হাসপাতালে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করব। আমরা টিকার জন্য চাহিদা দিচ্ছি। করোনার টিকা পেলে বয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বাদের এখানে টিকা দেওয়া হবে। কিট নেই, সরকারি পরীক্ষা বন্ধ: বুধবারের ওই সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরটিপিসিআর পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে কিট সংকটের কারণে কোনোটিতেই পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। যদিও শিগগিরই কিট পৌঁছে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা মোকাবিলায় নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি কিটের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। আমাদের কিট আনার জন্য লোক পাঠাতে বলা হয়েছে। কিট আসার পর সরকারিভাবে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। আশা করি, আমরা পর্যাপ্ত কিট পাব। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমাদের কাছে কিছু কিট এসে পৌঁছেছে। আমরা আগামীকাল শনিবার থেকে পরীক্ষা শুরু করতে পারব বলে আশাবাদী। চিকিৎসকদের আশঙ্কা—আসল পরিস্থিতি ধরা পড়ছে না: গত চার দিনে চট্টগ্রামে ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার দুজনের করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে আরও চারজনের করোনা শনাক্ত হয়। করোনা আক্রান্ত ছয়জনের কেউই বিদেশফেরত নন। চিকিৎসকদের মতে, সরকারি পরীক্ষা না থাকায় প্রকৃত সংক্রমণ চিত্র উদ্ঘাটন সম্ভব হচ্ছে না। বেসরকারি ল্যাবগুলোতে যেসব রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তা মোট চিত্রের সামান্য অংশ মাত্র। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রব বলেন, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে পরীক্ষার কিট আগেরটির চেয়ে আলাদা হবে। আলাদা না হলে করোনা ধরা পড়বে না। যারা বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করছে, তাদের মধ্যে কিছু ধরা পড়ছে। গত চার দিনে ছয়জন শনাক্ত হলেও বাস্তবে করোনা রোগী আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে। এতদিন চিকিৎসকরা করোনার পরীক্ষা ওভাবে করার পরামর্শ দিতেন না। সরকারিভাবে পরীক্ষা চালু হলে পরীক্ষার হার বাড়বে। কারণ, সবার বেসরকারিভাবে পরীক্ষা করার সামর্থ্য নেই। আমরা মনে করি, ২০২০ সালের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সরকারিভাবে পরীক্ষা শুরু করা যাবে, ততই মঙ্গল হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চীনে হুয়াওয়ের উত্থান সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন নির্ধারণে ২২ সদস্যের কমিশন গঠন দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে রাজধানীর গুলশানে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ‘গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করছে একটি গ্রুপ’ চিত্রনায়ক জসীমের ছেলে কণ্ঠশিল্পী রাতুল আর নেই সারাদেশে ইসির ৭১ কর্মকর্তা বদলি ভারতের সবচেয়ে বড় আইটি কোম্পানির কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা হামাসকে নির্মূল করে পূর্ণ বিজয় অর্জনে ইসরায়েল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: নেতানিয়াহু চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে যা বললেন আসামিরা গ্রিসজুড়ে ভয়াবহ দাবানল ভারতীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচন চায় জাগপা ফের অস্থির হয়ে উঠছে ভোজ্যতেলের বাজার এইচআইভি আক্রান্ত কিশোরীকে দুবছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, হাতেনাতে ৫ জন গ্রেপ্তার এশিয়া কাপের সূচি প্রকাশিত, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে? বাড়ছে নদীর পানি, কয়েক জেলায় আবারও বন্যার শঙ্কা যারা আ.লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই : কাদের সিদ্দিকী চাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ নেতা-কর্মী বহিষ্কার ইরানের রাস্তায় লাউডস্পিকার, আবারও ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নে অভিনব প্রস্তুতি আবর্জনায় ছেয়ে গেছে আমেরিকার বিভিন্ন শহর, বিপর্যস্ত নগরজীবন