
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলকে যেভাবে হত্যা করা হয়

রাশিয়ায় ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত, সুনামির সতর্কতা জারি

ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বাড়ি কিনলেই মিলছে পাসপোর্ট

পাকিস্তানের রেস্তোরাঁয় মিলছে গাধার মাংস

সন্তান কোলে নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে ভাষণ দিলেন নারী সিনেটর

মালয়েশিয়ায় ১৫ বাংলাদেশি আটক

দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে রাজধানীর গুলশানে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ
ত্রাণের নামে মরণ ফাঁদ, ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ৭০ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীও রয়েছেন।
বুধবার (১১ জুন) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার ভোর থেকে ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় ৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীও রয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, এখন দুর্ভিক্ষে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে গাজায়।
এদিকে মঙ্গলবার আবারও গাজার কেন্দ্রীয় অংশে ইসরাইল-নিয়ন্ত্রিত নেতসারিম করিডরের কাছে সামান্য খাবার সংগ্রহে আসা মানুষের ওপর গুলি চালায় দখলদার সেনারা। গাজা সরকারের তথ্য অফিস জানায়, এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১২ বছরের এক শিশুও রয়েছে। শিশুটির নাম মোহাম্মদ খলিল আল-আথামনেহ বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি মানুষ।
এই ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামের একটি বিতর্কিত সংস্থা, যার কার্যক্রম ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চলছে এবং এটি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করছে।
আরও পড়ুন
‘ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নতুন কৌশলে হতবাক পশ্চিমা বিশ্ব’
‘ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নতুন কৌশলে হতবাক পশ্চিমা বিশ্ব’
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় জনগণ এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে ‘মানব কসাইখানা’ বলে অভিহিত করেছেন। কারণ গত ২৭ মে থেকে সংস্থাটি ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন, আর আহত হয়েছেন প্রায় ১৫০০ জন।
গাজা সরকারের তথ্য অফিস এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, জিএইচএফ কার্যত একটি ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে, যেখানে ত্রাণের প্রলোভনে ক্ষুধার্ত মানুষদের টেনে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।
তাদের ভাষায়, জিএইচএফ এখন ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাতে এক ভয়ঙ্কর হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, যারা ত্রাণ দেওয়ার নামে নিরস্ত্র ও ক্ষুধার্ত মানুষদের মৃত্যুফাঁদে ডেকে নিচ্ছে।
আলজাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, জিএইচএফের এসব ত্রাণকেন্দ্র এখন যেন পুনরাবৃত্ত রক্তপাতের মঞ্চ হয়ে উঠেছে, যেখানে পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব হামলা চালানো হয়েছে বিভিন্ন দিক থেকে। ড্রোন, ট্যাংক ও স্নাইপার ব্যবহার করে এসব বিচ্ছিন্ন ত্রাণকেন্দ্রে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। আজ্জুম বলেন, যা হচ্ছে, তা মূলত মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার এক প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ মঙ্গলবার আবারও সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট ‘অভূতপূর্ব হতাশার পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে পাঁচ বছরের কম বয়সি অন্তত দুই হাজার ৭০০ শিশুকে চরম অপুষ্টিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। আর তাই দ্রুত মানবিক সহায়তা পুনরায় শুরু করার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় কার্যত কঠোর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। জিএইচএফের মাধ্যমে অল্প কিছু সাহায্য ঢুকলেও, বহু অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ত্রাণ সংস্থাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে যেসব সংস্থা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গাজার লাখো মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছিল, তাদের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।