সরকারি জমি বিক্রি করছে দখলদাররা

সরকারি জমি বিক্রি করছে দখলদাররা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ মে, ২০২৫ | ৯:০১ 37 ভিউ
রাজধানীর শহর খিলগাঁও মৌজার সিএস ৩১২ নম্বর দাগে প্রায় ৩২ কাঠা সরকারের জমি আছে। এ জমির বাজারমূল্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। অধিগ্রহণ করা এসব জমি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করায় আগের মালিকদের নামে খতিয়ান সৃষ্টি হয়েছে। ওই খতিয়ানমূলে অবৈধ দখলদাররা ওইসব জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, শহর খিলগাঁও মৌজায় ৮০/৬০-৬১ নম্বর এলএ কেসের মাধ্যমে এ জমিসহ আশপাশের বেশকিছু জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সরকারের অধিগ্রহণ করা ওই এলাকার অধিকাংশ জমিই বেদখল হয়ে গেছে। অধিগ্রহণ করা ওইসব জমি থেকে একসময় মাটি কেটে রেলওয়ের লাইন তৈরিতে ব্যবহার করায় সেখানে বড় জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। সরকারের অধিগ্রহণকৃত জায়গাজুড়ে তৈরি জলাশয় ভরাট করে সেমিপাকা স্ট্রাকচার গড়ে তুলে ভাড়া বাণিজ্যও করছেন দখলদাররা। স্থানীয় অসাধু চক্র সরকারি জমি দখল করে গড়ে তুলেছে রিকশার গ্যারেজ। এছাড়া খুপরি ঘর তুলে সেখানে মাদক ব্যবসা এবং অসামাজিক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। এসব কারণে ওই এলাকায় প্রায় ২০০ পরিবারের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শহর খিলগাঁও মৌজার সিএস ৩১২ নম্বর দাগের ৩২ কাঠা জমির দখলে রয়েছেন শেখ মো. সারওয়ার হোসেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, শহর খিলগাঁও মৌজার অধিগ্রহণকৃত জমির সিএস রেকর্ডের দাগ নম্বর ৩১২। ওই দাগে জমির পরিমাণ ৫২ শতক বা প্রায় ৩২ কাঠা। এসএ রেকর্ডে জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৩৮ কাঠা বা ৬৩ শতক এবং আরএস ও সিটি জরিপে জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ কাঠা বা ৬৫ শতক। ওই পুরো জমির শ্রেণি হিসাবে দেখানো রয়েছে ঝিল। কিন্তু দখলদাররা বহুদিন থেকে ওই জায়গার একাংশে মাটি ফেলে ভরাট করে উঁচু করেছে। সেখানে সেমিপাকা ঘর তুলে ভাড়া বাণিজ্যের পাশাপাশি কয়েকজনের কাছে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকাও আত্মসাৎ করেছে। বিক্রির পর দলিলও করে দিয়েছে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০১০ সালের ১ এপ্রিল সিটি খতিয়ান ৫৭৬ থেকে শেখ মো. সারওয়ার হোসেন, পিতা মৃত শেখ নূর মোহাম্মদ শহর খিলগাঁও মৌজার ৬৫ শতক সরকারি সম্পত্তির ভুয়া মালিক নিযুক্ত হন। সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ৩০৯৮নং আমমোক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে তিনি মালিকানার (ভুয়া) দাবিদার হন। এরপর ওই ভুয়া মালিক সিটি ৫৭৬ খতিয়ানের ৭০৬ নম্বর দাগ থেকে ২০১০ সালের ৫ এপ্রিল খিলগাঁও সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ৩৫৫২/১০ নম্বর বায়নানামা দলিল মারফতে সরকারি অধিগ্রহণকৃত ৭ কাঠা জমি বিক্রি করেন। ফিরোজ মিয়া গং ওই জমি কিনে নেন। এরপর সিটি খতিয়ানের ৫৭৬-এর ৭০৬ নম্বর দাগ থেকে ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর আরও ৮ কাঠা জমি বিক্রি করেন। ১৩ হাজার ১৯০ নম্বর দলিল মারফতে ওই জমি কিনেন আবু হেনা মোস্তফা রফিক। বাকি অংশও বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ৩১১ নম্বর দাগের দখলদার মতি গংয়ের থাবায় ঝিল ও খাল ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং রামপুরা থানায় বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার অভিযোগ করেছন। সেখানে তারা বলেছেন, সরকারের অধিগ্রহণকৃত জায়গায় দখলদাররা বেশকিছু রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি গ্যারেজ, দোকান, গরুর খামার, কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ওইসব জায়গায় বখাটে ছেলেরা আড্ডা দেয়, চিৎকার-চ্যাঁচামেচি করে। তাদের মধ্যে মারামারিও লেগেই থাকে। এতে ওই এলাকার বাসিন্দারা এবং বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সব সময় আতঙ্কে থাকে। মেয়েরা অলিগলিতে প্রতিদিনই ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের আরও অভিযোগ, গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতাধীন শহর খিলগাঁও মৌজার ঝিল ও খাল ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় ওই এলাকা বসবাস উপযোগিতা নষ্ট হয়েছে। অসাধু ও দখলদারচক্রের অবৈধ ও অসামাজিক কার্যক্রমের কারণে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এবং পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। অবৈধ দখলে নেওয়া জায়গায় গড়ে তোলা ঘরগুলোয় লোকজন ধরে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। গভীর রাতে সেখান থেকে কান্নাকাটি, চ্যাঁচামেচির আওয়াজ পাওয়া যায়। দিনরাত চলে অস্ত্রের মহড়া। দখলদারদের বক্তব্য : অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিএস ৩১২ নম্বর দাগের দখলদার শেখ মো. সারওয়ার হোসেন জানান, অভিযোগ সত্য নয়। তিনি এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তার নামের ভুয়া দলিল এবং যাদের কাছে বিক্রি করেছেন, তাদের বিষয় তুলে ধরলে সত্যতা স্বীকার করেন। বলেন, জমি নিয়ে অনেক মামলা চলছে। যাদের নামে আমি জমি দলিল করেছি, তারা রেজিস্ট্রি অফিসের লোক। আমাকে ভুল বুঝিয়ে এটা করেছে। এখন তাদেরকে এ এলাকায় দেখি না। এরপর এই প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিশেষ অনুরোধ জানান। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার জানান, শহর খিলগাঁও মৌজার গণপূর্তের জায়গাগুলো বেদখল এবং জালজালিয়াতি করে বিক্রির ঘটনা তার জানা নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেবেন। অবৈধ দখলদারচক্র সেখানে থাকলে তাদের উচ্ছেদ করা হবে এবং সরকারি সম্পদ রক্ষায় আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।

বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
রিটার্ন জমা দিলে পাবেন যেসব ছাড় নেতানিয়াহুর ওপর খেপলেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ৩২ নম্বর ভাঙার ঘটনাকে বীভৎস মববাজি বললেন রুমিন ফারহানা খোঁজ মিলল সেই ডিজিএমের, কোথায় ছিলেন তিনি সুখবর পাচ্ছেন প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক সাইফ পাওয়ার টেকের অধ্যায় শেষ, চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে নৌবাহিনী গাজীপুর মহানগর বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার ‘পাগল তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্বকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প রকেট চালিত গ্রেনেড দিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ইনিংসেই ডাবল সেঞ্চুরি? এমন কীর্তি ক্রিকেট ইতিহাসে হয়েছে মাত্র তিনবার। আর এখন সে তালিকার শীর্ষে উইয়ান মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডার বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কত্বের অভিষেকে অপরাজিত ২৬৪ রানে দিন শেষ করেছেন—যা এ ধরনের ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে ১৯৬৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ২৩৯ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রাহাম ডাউলিং। সেটাই এতদিন ছিল অধিনায়কত্বে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। আরও আগে ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ২০৩*। ২৭ বছর বয়সী মুল্ডারের এই অধিনায়কত্ব আসলে অনেকটাই আকস্মিক। নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা হ্যামস্ট্রিং চোটে জিম্বাবুয়ে সফরে যাননি। সহ-অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও অভিজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদাকেও বিশ্রামে রাখা হয়। এর ফলে প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব পান স্পিনার কেশব মহারাজ। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সময় কুঁচকিতে চোট পেয়ে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যান তিনিও। তখনই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মুল্ডারের কাঁধে। আর সেই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহারই করেছেন তিনি। ৩৪টি চার ও ৩টি ছক্কার মাধ্যমে দুর্দান্ত ইনিংস গড়ে প্রথম দিন শেষ করেছেন ২৬৪* রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৬৫। এটাই প্রথম নয়। সিরিজের প্রথম টেস্টেও দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন মুল্ডার, করেছিলেন ১৪৭ রান। ফলে তার ফর্ম বলছে, তিনি শুধু স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক নন, দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ভবিষ্যতের অন্যতম বড় ভরসাও বটে। রেকর্ড বইয়ে নাম উঠলো যাদের অধিনায়কত্বের অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি: উইয়ান মুল্ডার (দ.আফ্রিকা) – ২৬৪* বনাম জিম্বাবুয়ে, বুলাওয়ে ২০২৫ গ্রাহাম ডাউলিং (নিউজিল্যান্ড) – ২৩৯ বনাম ভারত, ১৯৬৮ শিবনারায়ণ চন্দরপল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) – ২০৩* বনাম দ.আফ্রিকা, ২০০৫ এছাড়া, মুল্ডার হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে অধিনায়কত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ক্রিকেটার—১৯৫৫ সালে জ্যাকি ম্যাকগ্লু প্রথম এই কীর্তি করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বিভিন্ন নিয়মিত তারকার অনুপস্থিতিতে হঠাৎ নেতৃত্ব পাওয়া মুল্ডার ব্যাট হাতে যা করে দেখিয়েছেন, তা শুধু রেকর্ড নয়—একটি বার্তাও। হয়তো ভবিষ্যতের নিয়মিত অধিনায়ক হওয়ার দিকেও তাকিয়ে আছেন তিনি। আর এমন অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বিশ্বও নিশ্চয় তার নামটি একটু আলাদা করে মনে রাখবে। অভিষেকেই ইতিহাস, ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রোটিয়া অলরাউন্ডারের বিশ্বরেকর্ড যে রেকর্ডে ম্যাক্সওয়েলের উপরে শুধু গেইল মেয়েদের পুরস্কার দেবে বাফুফে বাবার জন্য দাবা, ছেলের কথা রাখলেন মা মা হতে চান জয়া আহসান ‘বেবিটা আমার বোনের’, গুজব নিয়ে মুখ খুললেন তানজিন তিশা ঢালিউডে ছ’মাসে ২২ সিনেমা, কতটুকু ফুটলো আশার ফুল? ১৮৫ সিনেমার মহাতারকা শবনম, ২৫ বছর ধরে ভালো গল্পের অপেক্ষায় ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে খামেনি সংসদ নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারও নেই