বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠল ঘড়িয়ালের প্রজননকেন্দ্র

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠল ঘড়িয়ালের প্রজননকেন্দ্র

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯:৪৭ 56 ভিউ
নদীমাতৃক বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র এক সময় ছিল ঘড়িয়ালের আপন ঠিকানা। কিন্তু জলজ এই নিরীহ সরীসৃপ প্রাণীটি এখন মহাবিপন্ন। নানা কারণে প্রজনন হার কমে যাওয়ায় এক প্রকার বিলুপ্তির পথে ঘড়িয়াল। এমন সংকটময় প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গড়ে উঠল ঘড়িয়ালের প্রজননকেন্দ্র। সামাজিক বন বিভাগের রাজশাহীর পবা নার্সারির একটি পুকুরে এটি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে এনে দুটি ঘড়িয়াল অবমুক্ত করা হয় এই প্রজননকেন্দ্রে। একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী ঘড়িয়াল অবমুক্ত করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী। তিনি বলেন, নদী দূষণ, নাব্য হ্রাস, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, পাচার, ডিম নষ্ট হওয়া ও খাদ্য সংকটের কারণে ঘড়িয়ালের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটে। এসব কারণেই আজ তারা বিলুপ্তির পথে। রাজশাহীতে দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজননকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে যেন এ প্রাণীর অস্তিত্ব টিকে থাকে। ঘড়িয়াল অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-উপপ্রধান বন সংরক্ষক গোবিন্দ রায়, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্যা পাটওয়ারী, সামাজিক বন অঞ্চল বগুড়ার বন সংরক্ষক মুহাম্মদ সুবেদার ইসলাম, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এএম সালেহ রেজা, আইইউসিএনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর এবিএম সরোয়ার আলম এবং সেভ দ্য ন্যাচার অ্যান্ড লাইফ রাজশাহীর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। ঘড়িয়াল মূলত খুবই শান্ত, উপকারী জলজ প্রাণী। এটি বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২-এর তালিকাভুক্ত রক্ষিত প্রজাতি। আন্তর্জাতিকভাবে এটি সাইটিসের অ্যাপেন্ডিক্স-১-ভুক্ত প্রাণী এবং বর্তমানে ‘মহাবিপন্ন’ হিসাবে চিহ্নিত। এর ইংরেজি নাম harial এবং বৈজ্ঞানিক নাম avialis gangeticus। ঘড়িয়াল সংরক্ষণে এই উদ্যোগ নতুন নয়। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট রাজশাহীর শহিদ এএইচএ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার একটি পুকুরে ঘড়িয়ালের প্রজননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় চিড়িয়াখানায় দুটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ছিল, যেগুলো আগে জেলেদের জালে ধরা পড়ে। এর একটি পাঠানো হয় ঢাকা চিড়িয়াখানায়, যার নাম রাখা হয় ‘যমুনা’। ঢাকায় ছিল চারটি পুরুষ ঘড়িয়াল। অন্যদিকে ঢাকা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল এনে রাজশাহীর পুকুরে ছাড়া হয়, তার নাম দেওয়া হয় ‘গড়াই’। আর রাজশাহীতে আগে থেকেই থাকা স্ত্রী ঘড়িয়ালটির নাম হয় ‘পদ্মা’। এই আন্তঃচিড়িয়াখানা প্রাণী বিনিময়ের মাধ্যমে ‘যমুনা’ ঢাকা চিড়িয়াখানায় তিনটি পুরুষ সঙ্গী পায়, আর রাজশাহীর ‘পদ্মা’ পায় ‘গড়াই’কে। তবে আট বছরেও তাদের কোনো বাচ্চা হয়নি, কারণ ছিল প্রজননের অনুপযোগী পরিবেশ। তাই এবার আইইউসিএন এবং সামাজিক বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহীতে গড়ে তোলা হলো ঘড়িয়ালের উপযোগী প্রজননকেন্দ্র। নতুন ঘড়িয়াল প্রজননকেন্দ্র ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন প্রাণিবিজ্ঞানী ও পরিবেশবাদীরা। যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, তবে ঘড়িয়াল আবার ফিরতে পারে প্রাকৃতিক পরিবেশে, পদ্মা-মেঘনায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ট্রাম্পের হুমকি পাত্তাই দিল না আফগানরা অবশেষে হাত মেলাল ভারত, তবে… রাত ১০টার পরও চলবে মেট্রোরেল ময়লার ভাগাড় থেকে ৫ বস্তা এনআইডি কার্ড উদ্ধার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘের সম্মেলন কি ভূরাজনীতিকে প্রভাবিত করবে? বঙ্গোপসাগরে ২ লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস, ৫ দিনের পূর্বাভাসে যা জানা গেল পাকিস্তানের বিপক্ষে আবারও সহজ জয় ভারতের গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি একীভূত হওয়ার ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে : রাশেদ খান ৩ দেশের স্বীকৃতিতে নাখোশ ইসরায়েল ফিলিস্তিনকে ৩ দেশের স্বীকৃতিতে কী লাভ? অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি ভুঁইফোঁড় অ্যাওয়ার্ড নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন পূর্ণিমা বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে চায় স্টারলিংক সড়কের কাজ কাগজে, বাস্তবে নেই দুই মার্কিন জাহাজ কেনার চুক্তি আজ রাবিতে পোষ্য কোটা স্থগিত ৫ দিনে মূলধন কমেছে দুই হাজার ৬৬১ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে ২১৩ কোটি টাকা ঘুষ নেন সাইফুজ্জামান সময় বদলে দেদার চলছে রাজধানীর সিসা বার প্রকল্পে অপচয়ের উৎসব