
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

নতুন বাজারে ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, বন্ধ যান চলাচল

সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া

ঈদের ছুটি শেষ হতেই বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট

জেনেভা ক্যাম্প থেকে ৪ বস্তা টাকা উদ্ধার

ভাঙাচোরা রাস্তায় তুরাগে দুভোর্গের শেষ নেই

মোবাইল ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার
অস্তিত্ব বিলীনের পথে মুসলিম বাজার খাল

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা নানাবিধ সমস্যায় বসবাস করছেন। সামান্য বৃষ্টিতে প্রধান সড়কসহ অলিগলির সড়কে পানি জমে থাকে। এতে জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ওয়ার্ডের যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পড়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দখলদারদের কবলে পড়ে অস্তিত্ব বিলীনের পথে মুসলিম বাজার খাল। ফুটপাত চলে গেছে হকারদের দখলে।
খেলার মাঠ ও সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা। গ্যাস ও পানির তীব্র সংকট, অকেজো সড়কবাতি, মশা-মাছির উপদ্রব, বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত, অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, উন্নয়নের ধীরগতি, অবৈধ সিকিউরিটি গেট, নীরব চাঁদাবাজি ও ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদক বেচাকেনাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
ওয়ার্ড পরিচিতি : প্রায় ৬ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার। মিরপুর-১২-এর এ, বি, সি, ডি, ই, ত, ধ, প ব্লক, ডুইপ, ডিওএইচএস, সরকারবাড়ি, বেগুনটিলা, সাগুফতা, মোড়াপাড়া ক্যাম্প, মেডিকেল ক্যাম্প, বিন্দাবন ও উত্তর কালশী নিয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। এ ওয়ার্ডে পল্লবী থানা, মিরপুর সিরামিক, সিটি ক্লাব, মিরপুর ডিওএইচএস অবস্থিত।
সরেজমিন দেখা যায়, মিরপুর ১২ নম্বর মুসলিম বাজার থেকে সাংবাদিক আবাসিক এলাকা পর্যন্ত খালের জায়গা বেদখল ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমেছে। একটানা বৃষ্টিতে খাল ভরে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। খালের ময়লা আবর্জনা রাস্তার পানিতে ভাসছে। অনেক জায়গায় খালের ময়লা পানি গিয়ে বাসা বাড়িতে উঠেছে। পানির রং কালচে হয়ে গেছে। এ পানিতে মশা মাছি উড়ছে। মুসলিম বাজারের ১৫ ও ১৭ নম্বর রোডের শেষ মাথায় ধীরে ধীরে খাল দখল হওয়াড এর অস্তিত্ব বিলীনের পথে।
দক্ষিণ ডুইপ ৮ নম্বর লাইন থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত বড় ড্রেনটি ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ। ড্রেনের বেশিরভাগ স্লাব চুরি হয়ে গেছে। নিয়মিত ড্রেন ও খালের জায়গা পরিষ্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা জানান, কালশী, ১২ নম্বর বি, সি, ই এবং ধ ব্লক এলাকাটি সামান্য বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায়। ওয়ার্ডের একমাত্র কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর দুরবস্থা বহুদিনের। দীর্ঘদিন গ্যাসের সংযোগ নেই ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে। সেন্টারটির ভেতরের দেওয়ালের রং উঠে পলেস্তারা খসে পড়ছে। টয়লেটের পরিবেশ নোংরা ও চারপাশে ময়লা আবর্জনায় ভরা। বিনোদনের একমাত্র স্থান ১২ নম্বর ডি ব্লক ঈদগাহ মাঠ ও ১২ নম্বর লাল মাঠ সংস্কারের অভাবে খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মাঠের চারপাশে বড় বড় গর্ত রয়েছে।
বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। পুরো মাঠ কদর্মাক্ত থাকে। অনেক সময় মাঠ দখল করে রাজনৈতিক সমাবেশ ও মেলা বসে। বিকাল হলেই মাঠের চারপাশ দখল করে গড়ে ওঠে ভাসমান দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা। মাদকসেবী ও কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। এদিকে এই ওয়ার্ডে নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে সিকিউরিটি গেট বন্ধ রাখা হয়। অনেক সময় জরুরি প্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও বিদ্যুতের গাড়ি জরুরি প্রয়োজনে ঢুকতে পারে না। মিরপুর ১২ নম্বর এ এবং বি ব্লকের সিকিউরিটি গেট যেন গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সড়ক সংস্কার হলেও ১২ নম্বর ই ব্লক, ডি ব্লক, ত ব্লক, ধ ব্লক, সি ব্লক, বি ব্লক (একাংশ) ও কালাপানি এলাকায় সড়ক সংস্কারের কাজ ধীরগতির কারণে স্থানীয়রা দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করেন। কালাপানি ৬ নম্বর রোড, উত্তর ও দক্ষিণ ডুইপের বেশিরভাগ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী। ১২ নম্বর ই-ব্লকের ১ থেকে ৩৩ নম্বর রোড, ডি এবং ধ ব্লকের সড়কগুলো অনেক দিন থেকে ভাঙাচোরা। এদিকে ১২ নম্বর ই ও সি ব্লকের পার্কের গেট সব সময় বন্ধ থাকায় ভেতরে বিনোদন উপকরণ মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ই ব্লকের পার্কের ভেতরে শাকসবজি চাষ করা হচ্ছে।
সি ব্লকের পার্কের একাংশ দখল করে দলীয় কার্যালয় বানানো হয়েছে। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। ওয়ার্ডের কালশী রোড, মুসলিম বাজার, এ-ব্লকের থানা রোড, ত ও ডি-ব্লকের সংযোগ সড়কের ফুটপাত দখল করে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এতে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী। বিশুদ্ধ পানি ও গ্যাসের সংকট বিরাজ করছে ওই এলাকার কালাপানি, ১২ নম্বর এ, সি, ডি ও ই ব্লকে। ১২ নম্বর মুসলিম বাজারে বধ্যভূমি থাকলেও সরেজমিন এর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
ডিএনসিসি অঞ্চল-২-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান বলেন, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কী কী সমস্যা রয়েছে তা লিখিতভাবে জানালে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করব।
বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।