
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে সিটি ব্যাংক

২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপি প্রাথমিক শিক্ষায় কমছে ২ হাজার কোটি টাকা

ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি বাতিল করায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়েনি

বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দুই ধরনের দাম বা বিনিময় হার এখন উলটো স্রোত বয়ে চলেছে

সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদন ব্যাংক ঋণে নির্ভরতা কমেছে, বেড়েছে বিদেশি ঋণে

বাংলাদেশ হতে আম ও ইলিশ মাছ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ চীনের

কৃষিপ্রধান রংপুর বিভাগে এবারে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে
২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপি লাগাম টানছে হচ্ছে নতুন প্রকল্পে

যেনতেন প্রকল্প গ্রহণ, অপচয় রোধ এবং সীমিত সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এজন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নতুন প্রকল্পের লাগাম টানা হচ্ছে। কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রকৃত পক্ষে দেশ ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্ব মনে হলেই শুধু সেসব প্রকল্প যুক্ত করা হবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)। এ লক্ষ্যে বুধবার থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে ৫ দিনের সিরিজ বৈঠক শুরু হয়েছে। এদিকে নতুন এডিপিতে প্রকল্পভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ৭টি নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এসব মেনে চলার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বুধবার জানান, চলতি অর্থবছরের এডিপি যখন তৈরি করা হয়েছিল তখন ২ হাজার ৫০০ এর বেশি অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছিল মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। সেখান থেকে ৯২১টি প্রকল্প অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্পের তালিকায় স্থান দেওয়া হয়। কিন্তু আগামী অর্থবছরে নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রস্তাব এসেছে প্রায় দেড় হাজারের মতো নতুন প্রকল্পের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়তো ৫৫০টি থেকে ৬০০টির মতো প্রকল্প যুক্ত করা হতে পারে।
তিনি আরও জানান, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩০০ জন জাতীয় সংসদ-সদস্য ছিলেন। তারা প্রত্যেকেই তাদের এলাকার জন্য প্রয়োজনহীন প্রকল্প নিতে চাইতেন। ফলে তাদের চাপে অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের বোঝা বেড়ে গিয়েছিল। পরে এসব প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ব্যাপক অর্থের অপচয় হতো। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে ব্যাপক কঠোরতা অবলম্বন করেছে। একেবারেই প্রয়োজন না হলে কোনো নতুন প্রকল্প এডিপিতে যুক্ত করা হবে না। অথবা যেসব প্রকল্প দেরিতে বাস্তবায়ন করলেও কোনো সমস্যা নেই সেসব প্রকল্প নতুন প্রকল্পের তালিকায় না রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
জানতে চাইলে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, অতীতে লোক দেখানো এবং উচ্চাভিলাষী প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। ফলে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচের পরও সেসব প্রকল্প থেকে রিটার্ন কাঙ্ক্ষিত ছিল না। এখন সরকার যদি নতুন প্রকল্পের লাগাম টানতে পারে সেটি অবশ্যই ভালো হবে। কেননা জনগণের উপকার হয় অথবা অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে সেসব প্রকল্পই গুরুত্ব পাওয়া উচিত। অপ্রয়োজনীয় বা অনুৎপাদনশীল প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করে কোনো লাভ নেই। আমাদের তো সম্পদ সীমিত এবং অনেক বৈদেশিক ঋণও পরিশোধ করতে হবে। সেসব ভাবতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অনুমোদনহীন নতুন প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও বিবেচনার জন্য শুরু হওয়া সিরিজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন পরিকল্পনা সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে বুধবার প্রথমদিন অনুষ্ঠিত হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়সহ ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগসহ ৭টির সঙ্গে। এছাড়া ২৮ এপ্রিল স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে, ২৯ এপ্রিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। এসব বৈঠকে প্রস্তাবিত নতুন প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি, পালটা যুক্তি তুলে ধরা হচ্ছে।
এদিকে আগামী অর্থবছরের এডিপির আওতাভুক্ত নতুন-পুরাতন সব প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ৭টি নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। ২২ এপ্রিল এ সংক্রান্ত নির্দেশা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়েছে, এসব নির্দেশনা মেনে প্রকল্পভিত্তিক চূড়ান্ত বরাদ্দ প্রস্তাব ২৮ এপ্রিলের মধ্যে এডিপি/আরএডিপি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এএমএস) মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে পাঠাতে হবে।
নির্দেশনাগুলো হলো-আগামী অর্থবছরে শেষ করা হবে এমন প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে। তবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে সমাপ্তের জন্য নির্ধারিত কোনো প্রকল্পে বরাদ্দ কিংবা নতুন এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। এছাড়া আগে চলমান প্রকল্পে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। এরপরই নতুন অনুমোদিত প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করতে হবে। আগামী অর্থবছরের অনুমোদন দেওয়া নতুন প্রকল্পের জন্য সেক্টরভিত্তিক মোট বরাদ্দের ৫ শতাংশ থোক বরাদ্দ হিসাবে রাখতে হবে। বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে ম্যাচিং ফান্ড হিসাবে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। মূলধন, রাজস্ব, সিডি/ভ্যাটসহ অন্যান্য নগদ বৈদেশিক মুদ্রা খাতে সর্বশেষ অনুমোদিত প্রকল্প দলিলের সংস্থানের ভিত্তিতে সঠিকভাবে বরাদ্দ দিতে হবে। অনুমোদিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রাইস কন্টিনজেন্সি ও ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতে নীতিমালা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এ খাতে কোনো বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। ইআরডির দেওয়া প্রকল্পভিত্তক ঋণের কোনো পরিবর্তন হবে না। মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এর বাইরে কোনো অর্থ প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। সংস্থর নিজস্ব অর্থায়ন হলে তা স্পষ্ট করতে হবে।
বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।