
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল উন্মোচন তুরস্কের

দুর্ভিক্ষের কবলে মৃত্যুপুরী গাজা

ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা কমছে

ক্ষুধায় পথে পথে পড়ে আছে মানুষ

মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে চিরবিদায় জানাতে চলেছে ভারত

ওবামা রাষ্ট্রদ্রোহী, প্রমাণ আছে: ট্রাম্প

শুল্কে সুবিধা পেতে বাড়তি দামে যুক্তরাষ্ট্রের গম কিনবে সরকার
ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির অধিকারকে সমর্থন করে পাকিস্তান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সোমবার বলেছেন, ইসলামাবাদ ইরানের শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচির অধিকারকে পূর্ণ সমর্থন করে। তিনি আশ্বাস দেন, ইসলামাবাদ ও তেহরান পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে একযোগে কাজ করবে। এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এপিপি।
ইরান সফরকালে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ বলেন, ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে, যেখানে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ ও সহযোগিতার সব দিক উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, উভয় পক্ষই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেছে এবং পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিসমূহ বাস্তবায়নের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
আঞ্চলিক শান্তির জন্য ভারতের সঙ্গে সংলাপে প্রস্তুত
শাহবাজ বলেন, ভারতের সঙ্গে সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে পাকিস্তান আমাদের অসাধারণ সশস্ত্র বাহিনীর সাহসী প্রচেষ্টার মাধ্যমে এবং জনগণের দৃঢ় সমর্থনে উত্তীর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা শান্তি চাই এবং আলোচনা টেবিলের মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই। কাশ্মীরসহ সব বিবাদপূর্ণ বিষয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে সমাধান হওয়া উচিত, যেটা ভারতের লোকসভাও স্বীকার করেছিল যখন জওহরলাল নেহরু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
তিনি বলেন, জলবণ্টন, বাণিজ্য ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে আমরা প্রস্তুত, যদি ভারত আন্তরিক হয়।
তিনি আবারো বলেন, যদি ভারত আগ্রাসন চালিয়ে যায়, তবে পাকিস্তানও তার সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ড রক্ষা করবে।
বৈঠকে শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান ও ইরান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, উভয় দেশই মতৈক্যে পৌঁছেছে যে ভাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত।
তিনি জানান, তার সরকার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছে।
শাহবাজ বলেন, আমি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানাই, সম্প্রতি উপমহাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন এবং সহমর্মিতা দেখিয়েছেন।
শাহবাজ শরিফ বলেন, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এটি একটি রক্তাক্ত অধ্যায়।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন অবিলম্বে একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির জন্য তাদের প্রভাব কাজে লাগায়। তিনি বলেন, পাকিস্তান ইরানের পাশে আছে এবং শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পক্ষে কাজ করবে।
তিনি পুনরায় জানান, পাকিস্তান ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির অধিকারকে সমর্থন করে এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে একযোগে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং বলেন, পাকিস্তান ইরানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। উভয় দেশের মধ্যে শতাব্দীপ্রাচীন সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও সভ্যতাগত সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, দুই দেশই সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে সীমান্ত সুরক্ষায় একসাথে কাজ করবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ইরানের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বজায় রাখা জরুরি।
তিনি জানান, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়টিকে স্বাগত জানায় ইরান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য আলোচনাকে অপরিহার্য বলে মনে করে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিবেশী দেশগুলো একে অপরের সঙ্গে এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
ইরানের সাদাবাদ প্রাসাদে পৌঁছালে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। পাকিস্তান ও ইরানের জাতীয় সংগীত বাজানো হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
শাহবাজ শরিফের সফরসঙ্গী ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী তারিক ফতিমি।
বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।