
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ছাত্রদলের রাজনীতি নিয়মিত ছাত্ররাই করবে

এক জনের পদোন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়োগ সংক্রান্ত আইনে পরিবর্তনের অভিযোগ

ধর্ষণবিরোধী সমাবেশে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করায় এক ছাত্রী তোপের মুখে

দফা এক দাবি এক উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ

পোশাক নিয়ে হেনস্তার শিকার ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পাচ্ছেন

ইবির নতুন রেজিস্ট্রার হলেন ড. মনজুরুল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার পদ ভাগাভাগি নিয়ে হট্টগোলের সৃষ্টি
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধে অর্থ সংকটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সেখানে দলীয় বিবেচনায় অসংখ্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। তখন তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. আফতাব আহমাদের সময় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে হাজারের অধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেন। এ নিয়োগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিঞা রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরে ২০১২ সালে তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফসর মো. মসিউর রহমান পালিয় যান। এরপর প্রায় ১ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি পুনর্বহালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছেন। এই মুহূর্তে এত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন-ভাতার টাকা পরিশোধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় হিমশিম খাচ্ছে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক হাইকোর্ট বিভাগে এই নিয়োগের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করেন। ২০১১ সালে রিভিউ পিটিশনটির হাইকোর্ট বিভাগের রায় এবং পরে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী রিট পিটিশন পুনরায় শুনানিপূর্বক হাইকোর্ট বিভাগের ২০১২ তারিখের রায় অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ বাতিল করা হয়। সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইনজীবীর পরামর্শক্রমে তাদের লিখে দেওয়া প্রস্তাব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আকারে গ্রহণ করে জ্যেষ্ঠতা, চাকরির ধারাবাহিকতা, ভূতাপেক্ষিক বকেয়া বেতন-ভাতাদিসহ চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে ২টি সিভিল রিভিউ পিটিশন করা হয়। ইতোমধ্যে আপিল বিভাগ সিভিল রিভিউ পিটিশিন দুটির লিভ মঞ্জুর করেছেন। চাকরিচ্যুতরা পুনর্বহাল হয়ে কে কোন পদে ভূতাপেক্ষিক পদোন্নতি পাবেন, কত টাকা বকেয়া বেতন-ভাতা পাবেন ক্যালকুলেটর নিয়ে হিসাব কষতে বসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, কোনো সরকারের আমলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা হয়নি। প্রয়াত প্রফেসর ড. আফতাব আহমাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা না করে এক বছর সময়ের মধ্যে হাজারের অধিক লোক নিয়োগ দেন। নিয়োগ বাতিলের রায়ে হাইকোর্ট পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে পর্যালোচনা করেন। দেখা গেছে উক্ত ১১শ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিধিবিধান, নিয়মকানুন, রীতিনীতি মানা হয়নি। এক হাতে চাকরির আবেদন অন্য হাতে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। এরপর বিভিন্ন উপাচার্যের মেয়াদের অপ্রয়োজনীয় আরও শত শত জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেটি নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। বর্তমানে যে টাকা আছে তা দিয়ে কর্মরত প্রায় ১৫শ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর, বেতন-ভাতাদি প্রদান করা হচ্ছে। চাকরিচ্যুত এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুনর্বহাল করা হলে, তাদের সে পরিমাণ পদও খালি নেই। এছাড়া তাদের জ্যেষ্ঠতা এবং বকেয়া ভাতাদিসহ পুনর্বহাল করা হলে কে কোন পদে পদোন্নতি পাবেন এবং কে কত টাকা বকেয়া বেতন-ভাতা পাবেন তার হিসাব নিয়ে ক্যাম্পাসে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কাও রয়েছে। এসব বকেয়া পরিশোধে প্রায় হাজার কোটি টাকার মতো প্রয়োজন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত ফান্ড নেই বলে জানা গেছে। চাকরিচ্যুতদের অধিকাংশই বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত। তাদের বকেয়াসহ পুনর্বহাল করা হলে অনেকেই শুধু বকেয়া টাকা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবেন। কারণ বর্তমানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির থেকে অনেক ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত। চাকরিচ্যুত আবু হানিফ খন্দকার নামে এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের চাকরি ফিরে পেতে আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে। এটা নিয়ে কোর্ট কাজ করছে। আমরা দ্রুত রায় পেয়ে যাব। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ বলেন, চাকরিচ্যুতরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় নিজ উদ্যোগে হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দায়ের করে। আমরা এই মুহূর্তে কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছি। কোর্ট যেভাবে নির্দেশনা দেবে আমরা সেটাই বাস্তবায়ন করব। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন কমিটিও কাজ করছে বলে জানান তিনি।
বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।