আওয়ামী লীগ আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ছাপানো টাকার ঋণ পরিশোধ করছে অন্তর্বর্তী সরকার

আওয়ামী লীগ আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ছাপানো টাকার ঋণ পরিশোধ করছে অন্তর্বর্তী সরকার

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:২৬ 17 ভিউ
মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আওয়ামী লীগ আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ছাপানো টাকার ঋণ পরিশোধ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ছাপানো টাকা ঋণের মধ্যে ৫৪ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ঋণের স্থিতি কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকায়। ছাপানো টাকায় সরকারকে ঋণের জোগান দেওয়া বন্ধ করায় এবং বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করায় এ ঋণের স্থিতি কমেছে। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতির হারও কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে ছাপানো টাকায় সরকারের ঋণের স্থিতি কমলেও ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে সরকারের ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে সরকার ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে নতুন ঋণ নিয়ে ছাপানো টাকায় নেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সরকারের সার্বিক ঋণের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এতে বৈদেশিক ঋণের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সূত্র জানায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রাজস্ব আয় কমে গিয়েছিল। অন্যদিকে সরকার বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছিল। পাশাপাশি চলছিল লুটপাট ও টাকা পাচার। এতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অর্থ প্রবাহে মোটা অঙ্কের ঘাটতি দেখা দেয়। এ ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণের জোগান দিতে থাকে সাবেক দুই গভর্নর ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। এর মধ্যে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির করোনার সংক্রমণের সময় দেশে লকডাউনের কারণে রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায় টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণের জোগান দেন। যে কারণে করোনার পর মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে শুরু করে। করোনার সংক্রমণ কেটে গেলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় বৈশ্বিক মন্দা। এতে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা আরও ঝেঁকে বসে। এর প্রভাবে রাজস্ব আয় কমে যায়। পাশাপাশি ব্যাংকে শুরু হয় লুটপাট। পাচার হতে থাকে অর্থ। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি দেখা দেয়। ব্যাংকে দেখা দেয় তারল্য সংকট। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সরকারকে টাকা ছাপিয়ে ঋণের জোগান দিতে থাকেন। পাশাপাশি তিনি লুটপাটে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে তারল্যের জোগান দিতে থাকেন। এতে বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়ে যায়। পাশাপাশি রেমিট্যান্স কমা এবং আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার কারণে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এতে ডলারের দাম বেড়ে যায়। একদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি ও টাকার মান হ্রাস এবং টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়া-এ দুই কারণে মূল্যস্ফীতি লাগামহীনভাবে বেড়ে যায়। গত জুলাইয়ে এ হার বেড়ে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে ওঠে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। সাবেক দুই গভর্নর সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের লুটপাটের কথা জেনেও কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেননি। উলটো তারা লুটপাটের কারণে সৃষ্ট অর্থ প্রবাহের ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনৈতিকভাবে টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়েন। যার অনিবার্য পরিণতি হয় ডলারের দাম বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ২০২৩ সালের জুনে ছাপানো টাকার ঋণের স্থিতি বেড়ে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার ২২৮ কোটি ২০ লাখ টাকা নিয়েছিল কেবল আওয়ামী লীগ সরকার। এর মধ্যে কেবল ২০২২-২৩ এক অর্থবছরেই নিয়েছিল ৯৭ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা। ছাপানো টাকায় ঋণের বিষয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে সরকার ২০২৩ সালের শেষদিক থেকে ঋণ কিছুটা শোধ করতে থাকে। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার মাত্র ৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা পরিশোধ করেছিল। সরকারের শেষদিকে গত বছরের জুলাইয়ে আবার নতুন করে ১ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা ছাপানো অর্থে ঋণ নেয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তী সরকার টাকা ছাড়িয়ে ঋণ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণের জোগান দিতে মোটেও সম্মত নয়। তবে গত সরকারের আমলে লুটপাটের কারণে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে তারল্যের জোগান দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আর কোনো টাকা ছাপানো হয়নি। এমনকি সরকারের আর্থিক সংকটের মধ্যে ছাপানো টাকায় কোনো ঋণের জোগানও দেওয়া হচ্ছে না। উলটো মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে গত সরকারের আমলে ছাড়া ছাপানো টাকা পর্যায়ক্রমে বাজার থেকে তুলে নিচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৫৪ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলে নেয়। ফলে সরকারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণের স্থিতি কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকায়।

বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
জাতীয় দলে ফিরতে চান সেই নিষিদ্ধ ক্রিকেটার ডেভেলপমেন্ট কাপ হকিতে বিকেএসপির মেয়েদের বাজিমাত আবারও মা হচ্ছেন বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট আসছে ঈদেও মুক্তি পাবে আশনা হাবিব ভাবনা অভিনীত একটি সিনেমা নির্মিত হয়েছে আটজন তারকাশিল্পী নিয়ে ঈদের বিশেষ নাটক সিনেমায় শাবনূরের ফেরা নিয়ে সংকট কাটেনি গিজার পিরামিডের নিচে বিশাল ‘গোপন নগরী’ আবিষ্কারের দাবি আওয়ামী লীগের দোসররা অবাধে চলাফেরা করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ করার কোনো সুযোগ নেই কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠায় আলেমদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে হাসনাতের পোস্ট শিষ্টাচারবহির্ভূত : নাসীর উদ্দীন পাটওয়ারী ১০০ টাকা নিয়ে কুমিল্লা শহরে আসা এই সংগ্রামী নারী এখন কোটিপতি সাংবাদিক নির্যাতন ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে গৌরীপুরে বিক্ষোভ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: চট্টগ্রাম-৭ বিএনপির হুম্মাম ছাড়াও ৬ জন, জামায়াতের আমিরুজ্জামান অনেকেই মনে করি সুরের লহরি নৃত্যের তালই সংস্কৃতি, এটা সত্য নয় রাজধানীর সড়কে লক্কড়-ঝক্কড় ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল রোধে চলছে যৌথ অভিযান তিস্তা পাড়ের অধিক ভাঙন কবলিত ২০ কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য তৈরিতে অবশ্যই সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এবার লেবাননে হামলা শুরু করেছে ইসরাইল হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে ভারত কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি