সীমান্ত সম্মেলনে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে দুই দেশ সম্মত হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন

সীমান্ত সম্মেলনে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে দুই দেশ সম্মত হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১০:০৯ 52 ভিউ
ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলনে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে দুই দেশ সম্মত হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা অতীত অভিজ্ঞতা উল্লে­খ করে বলেন, এমন প্রতিশ্রুতি আগে অনেকবার দেওয়া হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন তেমন দেখা যায়নি। এবারও কি সিদ্ধান্তগুলো শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি কার্যকর হবে এ নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, সীমান্ত হত্যার ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান রোধের প্রতিশ্রুতি বিএসএফ’র আগেও বহুবার দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রতিশ্রুতির পরও সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলিতে ঝরে যাওয়া প্রাণের সংখ্যা কমেনি। এবার যে সাত সিদ্ধান্তে দুই দেশ সম্মত হয়েছে, তা কতটা বাস্তবায়িত হবে, সেটাই দেখার বিষয়। এ ব্যাপারে কূটনীতি বিশেষজ্ঞ সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিমা হায়দার শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, ভারতের সঙ্গে বর্তমানে বাংলাদেশের সমসম্পর্ক ততটা ভালো নয়। ভারত ইতোপূর্বে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত তারা কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়। এরই মধ্যে এই সীমান্ত সম্মেলনে যেসব প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তা আমার মনে হয় কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, অতীতে বিজিবি সীমান্ত ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিতে পারত না। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। বিজিবি যে এখন আগের মতো নয়, তা ভারতীয় পক্ষ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। এবার বিজিবি বুক চিতিয়ে কথা বলেছে। সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী স্পষ্টভাবেই সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিএসএফের মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরীর কাছে তিনি এসব হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানান। সংশ্লিষ্টদের মতে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জটিল সমীকরণে এসব সিদ্ধান্ত কাগজ থেকে বাস্তবে নামবে কি-না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। এদিকে সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্ত হত্যা বন্ধে ‘অ-প্রাণঘাতী নীতি’ অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এখন দেখার বিষয়, প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন কতদূর হয়, নাকি আবারও সীমান্তের এই সংকট অমীমাংসিতই থেকে যায়! সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত সীমান্ত হত্যা শূন্যকরণ : সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো, হত্যা ও মারধরের ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যৌথ টহল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় : সীমান্ত অপরাধ দমনে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে তাৎক্ষণিক ও আগাম গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান বাড়ানোর উদ্যোগ। সচেতনতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম : সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন। হত্যার তদন্ত ও ব্যবস্থা : সীমান্তে যে কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণে কঠোরতা : সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা, কাঁটাতারের বেড়া বা প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো নির্মাণের আগে যৌথ পরিদর্শন ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মাদক, অস্ত্র ও চোরাচালান প্রতিরোধ : ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, স্বর্ণ, জাল মুদ্রা ও অস্ত্র চোরাচালানসহ সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে যৌথ উদ্যোগ নেওয়া। মানব পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা : সীমান্ত পথে মানব পাচার বন্ধ করতে উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করবে এবং পাচারের শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধারে সহযোগিতা বাড়াবে। প্রসঙ্গত, ভারতের নয়াদিল্লিতে ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি- চার দিনব্যাপী এ সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিজিবি প্রধানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
দেশজুড়ে দখল–চাঁদাবাজি নতুন বন্দোবস্তের জন্য অশনি সংকেত: টিআইবি কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার ৫০০ উইকেট নিয়ে টি২০তে অনন্য রেকর্ড সাকিবের রোজ ঘি খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর? বেশি আয়ের চাকরি পেতে ৩ দক্ষতা অর্জন করতে পারেন ঘরে বসেই স্কয়ার গ্রুপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বন্যায় সরানো হলো ১৯ হাজার মানুষকে একাধিক দেশে ইরানের অস্ত্র কারখানা এবার শিকাগোতে সেনা পাঠাবেন ট্রাম্প কোলেস্টেরল কমাবেন কীভাবে কোলেস্টেরল বেড়েছে কীভাবে বুঝবেন প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত, নতুন এসেছে সোয়া লাখ রোহিঙ্গা ‘৫ আগস্ট ঘটিয়েছে কালো শক্তি জামায়াত’- বক্তব্যের জেরে ফজলুর রহমানকে শোকজ বিয়ের পর মেয়েরা মোটা হয়ে যায় কেন? মেলানিয়াকে গাজা নিয়ে মুখ খুলতে বললেন তুর্কি ফার্স্ট লেডি কিশোরগঞ্জে যুবদলের দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০ মায়ের দেওয়া কিডনিতে বাঁচা যুবক প্রতিবেশীর হামলায় নিহত সোমবার ঢাকায় বসছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলন গণপিটুনিতে মৃত্যু ঘিরে দেশজুড়ে উৎকণ্ঠা ঘুষকাণ্ডে জামায়াতের আইনজীবীর সনদ স্থগিত