আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার: পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনার নির্দেশ পেন্টাগনের

২১ মে, ২০২৫ | ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , দৈনিক গণঅধিকার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাটি নিয়ে একটি বিস্তৃত ও গভীর পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন। এই প্রত্যাহারকে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম বিশৃঙ্খল ও প্রাণঘাতী আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সরকারি নথির মধ্যে হেগসেথ বলেন, আমি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এই ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এখন অপরিহার্য। আমেরিকার জনগণ এই অধ্যায়ের সম্পূর্ণ চিত্র জানার অধিকার রাখে। নথি অনুসারে, একটি বিশেষ পর্যালোচনা দল গঠন করা হবে, যারা পূর্ববর্তী তদন্ত, ঘটনার তথ্য-প্রমাণ, সাক্ষ্য, নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তগুলো পুনর্ব্যবচ্ছেদ করবে। নথির শেষ অংশে বলা হয়েছে, এই টিম নিশ্চিত করবে—আমাদের জাতির সাহসী যোদ্ধা ও সাধারণ নাগরিকদের প্রতি জবাবদিহিতা যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে আফগান সেনারা প্রায় প্রতিরোধহীনভাবে ভেঙে পড়ে এবং তালেবান অল্প সময়ের মধ্যেই রাজধানী কাবুলসহ দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর কাবুল বিমানবন্দর থেকে এক নাটকীয় ও ত্বরিত সরিয়ে নেওয়া অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তবে ২৬ আগস্ট, ২০২১—এই উত্তপ্ত সময়েই এক আত্মঘাতী হামলায় কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে প্রাণ হারান ১৭০ জনের বেশি মানুষ, যাদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন মার্কিন সেনা। হামলাটি যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে গভীর শোক ও সমালোচনার জন্ম দেয়। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা প্রত্যাহার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেছিলেন, আরও ৫ বা ১৫ বছর থাকলেও পরিস্থিতি বদলাত না। কিন্তু সমালোচকদের মতে, পরিকল্পনার ঘাটতি ও ভুল সিদ্ধান্তই আফগান সরকারের পতন এবং তালেবানদের পুনরুত্থানের পথ প্রশস্ত করে। প্রতিরক্ষা সচিব হেগসেথের এই নতুন উদ্যোগ আফগানিস্তান অধ্যায়ের পুনর্মূল্যায়নের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা গ্রহণ এবং জবাবদিহিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।