
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দেওয়া নিয়ে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, এলাকা রণক্ষেত্র

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু: জয়

আলো নিভিয়ে একাত্তরের কালরাত স্মরণ করল বাংলাদেশ

স্বাধীনতা আমাদের স্বাধীনতা

আইনি বাধায় আটকে আছে রাজাকারের তালিকা

ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ আচরণের প্রশংসায় রাশিয়া
আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ
স্বাধীনতা হারাচ্ছে পিপিপি কর্তৃপক্ষ
সংশোধনে বলা হয়েছে, ‘সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে’ প্রবিধি প্রণয়ন করতে পারবে পিপিপি কর্তৃপক্ষ

স্বাধীনতা হারাচ্ছে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপি)। বিদ্যমান আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে উল্লেখ করা আছে। সেটি সংশোধন করে ‘স্বাধীন’ শব্দটি ফেলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড অব গভর্নরসের হাতে থাকা বেশ কিছু ক্ষমতা প্রত্যাহার করে সরকার নিজের হাতে নিচ্ছে। এমন অন্তত ১১টি সংশোধনসহ আজ অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে পিপিপি আইনের প্রস্তাবিত খসড়া উঠানো হচ্ছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। পিপিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নিয়ন্ত্রণাধীন একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করছে।
বিদ্যমান আইনে বলা হয়েছে, ‘আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হইবে।’ প্রস্তাবিত সংশোধনে বলা হয়েছে, ‘আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ হইবে।’ বিদ্যমান আইনে পিপিপি প্রকল্পে সরকারি আর্থিক অংশগ্রহণ ও প্রণোদনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষমতা আছে। প্রস্তাবিত সংশোধনে ‘প্রণোদনা’ শব্দটি বাদ দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে বর্তমান আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বোর্ড অব গভর্নরস দ্বারা নিয়োগের কথা বলা হলেও সংশোধনী প্রস্তাবে সেটা সরকারের হাতে নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষের সাংগঠনিক কাঠামো ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের যে ক্ষমতা বোর্ড অব গভর্নরস-এর হাতে রয়েছে সেটাও সরকারের হাতে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে প্রবিধানমালার অস্পষ্টতাজনিত কারণে কোনো সমস্যার উদ্ভব হলে আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সে বিষয়ে বোর্ড অব গভর্নরস প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা দিতে পারে। এখন সেটা বোর্ডের পরিবর্তে সরকার নিজের হাতে নিচ্ছে।
বিদ্যমান আইনের ক্ষমতা অনুযায়ী পিপিপি কর্তৃপক্ষ সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রবিধি প্রণয়ন করতে পারে। এই বিষয়ে প্রস্তাবিত সংশোধনে বলা হয়েছে, ‘সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে’ পিপিপি কর্তৃপক্ষ এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। এছাড়া বিদ্যমান আইনের ৪১ নাম্বার ধারাটি সম্পূর্ণ বিলুপ্তের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের বিধানাবলি বা উহার অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান অনুসারে কার্য-সম্পাদনকালে বা কার্যসম্পাদনের অভিপ্রায়কালে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরামর্শক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ পেনাল কোড-১৮৬০ অনুাযায়ী সরকারি কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন।’ প্রস্তাবিত সংশোধন গ্রহণ করা হলে এই ধারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অন্যদিকে মন্ত্রিসভায় ‘ডিস্ট্রিক্ট (এক্সটেনশন টু দ্য চট্টগ্রাম হিল-ট্র্যাক্টস) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৪ সংশোধনেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সামরিক শাসনামলে প্রণীত অধ্যাদেশগুলোকে বাংলায় ভাষান্তর এবং আইনে রূপান্তর করার বিষয়ে উচ্চ আদালতের থাকা নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত অধ্যাদেশটি সংশোধন করা হচ্ছে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন করে এই প্রস্তাবিত আইনটির নামকরণ হচ্ছে, ‘জেলা (চট্টগ্রাম পাবর্ত্য জেলাসমূহে বলবৎকরণ) আইন-২০২১’।
সংক্ষিপ্ত এই আইনের ৩ ধারায় একটি উপধারা সংযোজন করা হয়েছে। সংযোজনের জন্য প্রস্তাবিত উপধারায় বলা হয়েছে, ‘কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর অধীন সৃজিত বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা ডিস্ট্রিক্ট অ্যাক্ট, ১৮৩৬-এর অধীন সৃজিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকেই পিপিপি নিয়ে উদ্যোগের আশাবাদ তৈরি হয়। কিন্তু প্রথম সরকার পার হয়ে গেলেও সে বিষয়ে আইনি কাঠামো ছিল না। সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকার সময় থেকে পিপিপি নিয়ে ব্যাপক আশা দেখানো হয়। অনেক আলোচনা হলেও প্রতিষ্ঠানটির আইন প্রণয়ন হয় ২০১৫ সালে।
এরপর কর্তৃপক্ষ গঠন হলেও পিপিতে বড় ধরনের কোনো অগ্রগতির দৃশ্যমান অর্জন নেই। এখন ছয় বছরের মাথায় পিপিপির ‘স্বাধীন’ সত্তার বৈশিষ্ট্য ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি কতটা এগোতে পারবে তা নিয়ে সংশয় থাকবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নিয়ন্ত্রণাধীন একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করার পরও এর স্বাধীনতা কেন আইনিভাবে ছেঁটে ফেলতে হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।
দৈনিক ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।