
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

‘ততক্ষণ খেলব যতক্ষণ না আমার চেয়ে ভালো কাউকে দেখব’

দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় টার্গেট দিল বাংলাদেশ

সাকিব-ইয়াসিরে বড় সংগ্রহের পথে বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল দক্ষিণ আফ্রিকা

অবসরের প্রশ্নে এবার যা বললেন শোয়েব মালিক

হঠাৎ মত বদলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে রাজি সাকিব

শেন ওয়ার্নের ‘শতাব্দীর সেরা’ বলের গল্প
মন্দিরঘোনায় চাঁদের আলো

ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলার এক অজপাড়া গ্রাম মন্দিরঘোনা। চারদিকে নেতাই নদীর বেষ্টনী। মাঝখানে কিছু ঘরবাড়ি নিয়ে ওই গ্রামের অবস্থান।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামটিতে যেতে হলে নেতাই নদীতে নৌকাই একমাত্র ভরসা। শুকনো মৌসুমেও এই নদীতে পানি থাকে তাই অনেকটা কষ্ট করেই যাতায়াত করেন ওই এলাকার মানুষ। অজপাড়া হলেও এবার ওই গ্রামে যেন এসেছে চাঁদের আলো।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দার বাড়ি মন্দিরঘোনা গ্রামে। সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত ওই গ্রাম থেকেই উঠে এসেছেন এই অদম্য কিশোরী। যার পায়ের জাদুতে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের দরবারে।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে এক আদিবাসী পরিবারে জন্ম মারিয়া মান্দার। তার বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। মা এনোতা মান্দা অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোরকম সংসারটা ঠিকিয়ে রেখেছেন। তার আদর স্নেহে বড় হয়েছেন মারিয়া ও তার দুই বোন ও এক ভাই।
ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে প্রায় ১২-১৩ জন খেলোয়াড় সুযোগ পায় জাতীয় নারী ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে। তাদেরই একজন মারিয়া। অত্যন্ত দক্ষতা আর নিজের নিখুঁত ফুটবল খেলা উপহার দিয়ে নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। পুরস্কার হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্ব পায় সে। সেই বছরই বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব। সদ্য সমাপ্ত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ দলেরও অধিনায়কের দায়িত্ব পান মারিয়া মান্দা। তার নেতৃত্বে এবারো চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সারা দেশে প্রশংসায় ভাসছেন মারিয়া মান্দারা। সেই সাথে জীবনের সাথে সংগ্রাম করা মারিয়ার মা এনোতা মান্দার জীবনেরও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
আগে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করলেও বর্তমানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে মারিয়ার পরিবারের। আজ মারিয়ার বাড়িতে বড়দিনের উৎসব। শুক্রবার রাতে বড়দিনের ছুটিতে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন মারিয়া মান্দা। শনিবার দুপুরে কথা হয় তার মা এনোতা মান্দার সাথে।
তিনি বলেন, আজ আমাদের দুটি উৎসব হচ্ছে- একটি বড়দিন ও অন্যটি মারিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জিতেছে। মারিয়া জানান, আমাদের বাড়ির সামনে নেতাই নদীতে ব্রিজ দরকার, বন্যায় আমাদের বাড়িতে পানি চলে আসে, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ব্রিজের দাবি জানান।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, মারিয়া মান্দা দেশের সুনাম বয়ে আনছে। সে আমাদের গর্ব।
মারিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলসিন্দুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মালা রাণী সরকার বলেন, আমাদের স্কুলের ছাত্রী মারিয়া দেশের সুনাম বয়ে আনছে, এতে আমরা গর্বিত। আমরা চাই এভাবে আরও জয় এনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
দৈনিক ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।