আমন মৌসুমে সার সরবরাহ ব্যাহতের শঙ্কা

আমন মৌসুমে সার সরবরাহ ব্যাহতের শঙ্কা

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২২ মে, ২০২৫ | ১০:৫৮ 32 ভিউ
আগামী আমন মৌসুমে ইউরিয়া ও নন-ইউরিয়া সার সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। গত বছর বোরো মৌসুমে বিএডিসি এবং বিসিআইসির সার সরবরাহে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সরবরাহ সঠিকভাবে না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারের সংকট দেখা দিয়েছিল। ইউরিয়া সার সরবরাহ চেইনে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে আগামী মৌসুমেও কৃষক সঠিক সময়ে সার পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আমন মৌসুমে চাষাবাদ নির্বিঘ্ন করতে ইউরিয়া সার আমদানির জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) সরকারের ভর্তুকির আওতায় যে সার আমদানি করছে, তা পরিবহণ ঠিকাদার কর্তৃক আত্মসাতের ঘটনা ঘটে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি সার পরিবহণের জন্য পরিবহণ ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি ও দুর্নীতির কারণে বারবার সার কেলেঙ্কারি ঘটছে। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতিবছর অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ পরিবহণ ঠিকাদারদের অন্তর্ভুক্তিকরণ ও কাজ প্রদানের মাধ্যমে সরকারি সার আত্মসাতের পথ প্রশস্ত করা হচ্ছে। তাদের কারণে সার সেক্টর বর্তমানে হুমকির মুখে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রোটন ট্রেডার্সের মালিক সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খান প্রোটন, নবাব অ্যান্ড কোং-এর মালিক মো. নবাব খান এবং কুষ্টিয়া ট্রেডিং এজেন্সির মালিক মোখলেছুর রহমানের মতো অদক্ষ কিছু পরিবহণ ঠিকাদার কর্তৃক প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সরকারি সার আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। যার আমদানি মূল্য ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সেসময়ে কিছু কিছু নতুন ঠিকাদার সরকারের আমদানিকৃত সার সঠিক সময়ে বিএডিসি ও বিসিআইসির গুদামে বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আগামী আমন মৌসুমে যথাসময়ে কৃষকের হাতে সার পৌঁছাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায়, জিটুজির মাধ্যমে সরকারি আমদানিকৃত ইউরিয়া ও নন-ইউরিয়া সারের পরিবহণ ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন করে বিএসসি। সংস্থাটির উদাসীনতার কারণে প্রতিবছর অদক্ষ পরিবহণ ঠিকাদার নিয়োগ পাচ্ছে। ফলে প্রতিবছরই ঘটছে সার আত্মসাতের ঘটনা। সূত্রটি আরও জানায়, জিটুজির মাধ্যমে আমদানিকৃত সারের দরপত্র আহ্বান, দরপত্র মূল্যায়ন ও সর্বনিু দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদান করে বিএসসি। সরকারের আমদানিকৃত সার প্রতিবছর আত্মসাতের ঘটনার পেছনে বিএসসি অনেকাংশে দায়ী। শিপিং করপোরেশনের চার্টারিং অ্যান্ড ট্রাম্পিং বিভাগের কর্মকর্তাদের সহায়তায় পরিবহণ ঠিকাদারের দক্ষতা ও সামর্থ্য যাচাই-বাছাই না করেই ভুয়া-জাল অভিজ্ঞতার সনদের মাধ্যমে পরিবহণ ঠিকাদার নিয়োগ দিচ্ছে। এর মধ্যে বর্তমানে স্বদেশ শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক কোং, সামিট অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্টার ওশান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে অভিযোগ রয়েছে-জিটুজির মাধ্যমে আমদানিকৃত সার বছরের পর বছর পরিবহণ সম্পন্ন না করা এবং তাদের নিজস্ব সক্ষমতা নেই সঠিক সময়ে বিসিআইসি ও বিএডিসির গুদামে সার পৌঁছে দেওয়ার। ফলে প্রতিবছরই কৃষি মৌসুমে কৃষক সঠিক সময়ে সার পাচ্ছেন না। এছাড়া এসব পরিবহণ ঠিকাদার অস্বাভাবিক মূল্যে ইউরিয়া ও নন-ইউরিয়া সারের কার্যাদেশ নিচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন সম্প্রতি ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। সাধারণত এমন টেন্ডারে জাহাজ ভাড়া, ট্রাক ভাড়া, লাইটার ভাড়া, লজিস্টিক সাপোর্ট, অপারেশনাল খরচ এবং নির্ধারিত মুনাফা যোগ করে প্রতি মেট্রিক টন ইউরিয়ার জন্য ৫০ থেকে ৫২ মার্কিন ডলার খরচ নির্ধারণ করা হয়। তবে এবারের টেন্ডারে দেখা যাচ্ছে অস্বাভাবিক প্রবণতা। ৬ থেকে ৮ ডলার কমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। এমন কম দর প্রদান যদি প্রকৃত খরচ কাঠামোর নিচে হয় তবে তা ভবিষ্যৎ পরিষেবা বা ডেলিভারিতে সংকটের কারণ হতে পারে। একজন জাহাজ পরিবহণ বিশ্লেষক জানান, বাজেট যদি ৫০ ডলার হয় আর কেউ ৪৪ ডলারে কাজ করতে চায়, তাহলে সেখানে গুণগত মান বা সময়সীমা বিপন্ন হতে পারে। এটি প্রথম দর্শনে সরকারের কাছে ব্যয়সাশ্রয়ী মনে হলেও এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে ভয়াবহ দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সারের চোরাচালান। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ কৃষককে। আর মুনাফা ভোগ করছে একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামিট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মো. ফরিদ হোসেনকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে এ প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে নিজের নাম প্রথমে অস্বীকার করেন। পরে নিজের নাম ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক স্বীকার করে বলেন, আমি সবকিছু দেখি না। সবকিছু দেখেন প্রতিষ্ঠানের আরেক পরিচালক ওবায়েদুর রহমান। তিনি মঙ্গলবার দেশের বাইরে গেছেন। স্বদেশ শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক কোম্পানির পরিচালক মো. সুমনকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ না করে বারবার সংযোগ কেটে দেন। পরে তার জেনারেল ম্যানেজার ইফাদ জিকু কল ব্যাক করে বলেন, মালিকের সঙ্গে আলাপ করে আপনাকে রাত ১২টার পর জানাব।

বর্ণমালা টেলিভিশন এর সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইরানে লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল: বিশ্লেষক বৈঠক চেয়ে ইরানকে জাতিসংঘ পরমাণু সংস্থার চিঠি যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে যা বলল ইরানের সুপ্রিম কাউন্সিল সংকটে পড়বে বেসরকারি খাত দেশে চালু হলো ‘গুগল পে’ আকাশসীমা খুলে দেওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে বিমান চলাচল স্বাভাবিক সহপাঠীকে ধর্ষণের পর ভিডিও : শাবিপ্রবির সেই ২ ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কার বাদীকে বিয়ের পর গায়ক নোবেলের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই কুষ্টিয়ায় সরকারি অফিস টাইম ফাঁকি দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা নিজ ক্লিনিকে রোগী দেখেন আরএমও হোসেন ইমাম জল সনদে চাকুরি, কলেজ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ সিরিয়ার গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ২০ জনগণের বন্ধু হতে পারলেই পুলিশের কলঙ্ক মুছে যাবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগর ভবন খুলল ৪০ দিন পর, প্রশাসকের কক্ষে ‘তালা’ ইরানের মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্ধকারাচ্ছন্ন ইসরাইল জীবনের সবচেয়ে ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতিতে খামেনি এই দেশগুলির বেশিরভাগ মুসলিম মেয়েই কুমারী তীব্র লড়াইয়ের লক্ষ্যবস্তুতে ‘তেহরান’ ইরান-ইসরাইল সংঘাত: যুদ্ধের বাটনে এআই চট্টগ্রামে করোনায় আরও ২ জনের মৃত্যু ইরানের পাল্টা হামলা: ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটছে ইসরাইলিরা